ছবি প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যেন কেঁচো খুঁড়তে কেউটে! নাগরিকত্বের প্রমাণ নেই খোদ হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টারের কাছেই। একটি আরটিআইয়ে জানা যায় ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণে প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে পারবেন না হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী। তাই গেরুয়া শিবির এনআরসি, এনপিআর নিয়ে যতই সোচ্চার হোক না কেন নিজেদের বক্তব্যের জালেই যে তারা ক্রমশ জড়িয়ে যাচ্ছেন সেই বিষয়েই আর বলার অপেক্ষা রাখেন না।
প্রতিটি রাজ্যে গলা ফাটিয়ে চিৎকারের সঙ্গে সঙ্গে দেশে সিএএ, এনআরসি হবে, বিরোধীদের একরকম হুঁশিয়ারি দিতেও শোনা গেছে পদ্ম শিবিরের নেতাদের। তবে তাদের কথায় বার বারই ধরা পড়েছে অসংগতি। কেউ বলছেন সিএএ হবে এনআরসি নয়, কেউ বলছেন দুটোই হবে। কেউ আবার বলছেন সিএএ, এনআরসি এনপিআর যাই হোক কোনও নথি দেখাতে হবে না। এখন প্রশ্ন সিএএ, এনআরসি, এনপিআর যাই হোক সেই সবের জন্যই তথ্য সংগ্রহ করা প্রয়োজন। নথি না দেখালে তথ্য সংগ্রহ করা হবে কীভাবে? মৌখিক কথায় ভিত্তিতেই কী সংগৃহীত হবে তথ্য? তাও যদি হয়, তাহলেই বা কতজন নিজেদের বাবা, নাম জন্ম তারিখ সম্পর্কে তথ্য দিতে পারবেন? এমন প্রচুর মানুষ আছেন যারা বাবার জন্ম তারিখটাই জানেন না তখন কী হবে তাদের?
সরকার তাদের সম্পর্কে কী পদক্ষেপ নেবেন? এরকম যখন একের পর এক প্রশ্ন উঠে আসছে তখনই গেরুয়া শিবিরের প্রবীণ নেতা তথা মনোহরলাল খাট্টারের নাগরিকত্ব প্রমাণ নেই বলে জানা যায়। এমনকি নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে পারবেন না হরিয়ানার (Haryana) রাজ্যপাল সত্যদেব নারায়ণ আর্য ও সে রাজ্যের মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও। ২০ শে জানুয়ারি, পানিপথের এক কর্মী পি পি কাপুর হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল সত্যদেব নারায়ণ আর্য ও রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাগরিকত্বের প্রমাণ সম্পর্কে বিশদ তথ্য জানতে চেয়ে একটি আরটিআই দায়ের করেছিলেন। সেই আরটিআইয়ের জবাব পেয়ে তো তিনিও অবাক হয়ে যান। পিপি কাপুরের দায়ের করা আরটিআইতে হরিয়ানার জন তথ্য আধিকারিক পুনম রাঠি বলেন, “যে তাঁর কাছে থাকা রেকর্ডে এ বিষয়ে কোনও তথ্য নেই।”
তিনি বলেন, “ওই সম্মানিত ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব সম্পর্কিত নথি নির্বাচন কমিশনের কাছে থাকলেও থাকতে পারে।” গত সেপ্টেম্বরেই রাজ্য নির্বাচনী প্রচারের সময় হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করার জন্য জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আর সেই এনআরসি নিজের রাজ্যে লাগু করতে গেলে যে নাগরিকত্বের প্রমাণ দেওয়া প্রয়োজন তা দিতে গেলেই নাজেহাল হতে হবে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীকে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী খট্টর বলেন যে পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হওয়া প্রায় ১৫০০ মানুষ পালিয়ে এসে হরিয়ানায় আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে যদিও একটিই মুসলিম পরিবার রয়েছে। এখন সেই মুসলিম পরিবারকে বাদ দিয়ে বাকিদের সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের আওতায় ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.