সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুই মানুষের তফাত যে শুধু শিরদাঁড়ায়, তা প্রমাণ করে দিলেন একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। জাঁদরেল পুলিশকর্তার সামনে যেখানে সবাই সেলাম ঠুকতে ব্যস্ত থাকে, সেই পুলিশ অফিসারের সামনে দাঁড়িয়ে, তাঁর চোখে চোখ রেখে মেয়েটি সরাসরি প্রশ্ন করল, “গ্যারান্টি দিতে পারবেন, উন্নাওয়ের মতো ঘটনা আমার সঙ্গে ঘটবে না?” মাত্র ষোলো-সতেরো বছরের এক কিশোরীর মুখে এমন কথা শুনে হতভম্ব পুলিশকর্তা।
‘বালিকা সুরক্ষা জাগ্রুকতা অভিযান’ নামে মেয়েদের সুরক্ষা নিয়ে একটি অভিযান চালাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। সেই উপলক্ষেই বরাবাঁকির আনন্দ ভবন স্কুলে গিয়েছিলেন পুলিশের পদস্থ অফিসাররা। দলে ছিলেন অ্যাডিশনাল পুলিশ সুপার (উত্তর) আর এস গৌতম। নারী সুরক্ষা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে স্কুলের মেয়েদের তিনি বলেন, প্রতিটি মেয়েকে নিজের সুরক্ষা নিয়ে সবসময় সচেতন থাকতে হবে। যদি কোনও সমস্যা হয় তবে যেন তারা পুলিশের টোল-ফ্রি নম্বরে ফোন করে। তখনই মুনিবা কিদওয়াই নামে এক ছাত্রী পুলিশের দিকে এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন।
একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী প্রশ্ন করেন, যদি অভিযুক্ত বিজেপি বা তার মতো কোনও রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষক হয়, তাহলে কি ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে? এরপরই উন্নাও ধর্ষণ কাণ্ডের কথা তোলে সে। বলে, “সবাই জানে ওটা দুর্ঘটনা ছিল না। ট্রাকের নম্বর প্লেট কালো রং দিয়ে ঢাকা ছিল। যখন কোনও সাধারণ মানুষ যদি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকে, তখন প্রতিবাদ করা এক রকম। কিন্তু যখন কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তি এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকে, তখন? ” এরপর তাঁর প্রশ্ন, “প্রতিবাদ করার পর আপনি গ্যারান্টি দিতে পারবেন ওই রকম ঘটনা আমার সঙ্গেও ঘটবে না? আমি কি ন্যায় বিচার পাব? কারণ আমরা সবাই জানি উন্নাওয়ের ওই মেয়েটিকে এক বিজেপি নেতা ধর্ষণ করেছিল। আর যখন সে আইনি পথে লড়তে গেল, তাঁর জীবনে দুর্ঘটনা ঘটে গেল। ও এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।”
Very powerful this. A school girl narrates the sufferings if the Unnao Rape Victim and her family members and asks the cops if we common citizens raise our voice, will we get justice?
— Prashant Kumar (@scribe_prashant) July 31, 2019
The cops were at the school organising a function on women security in Barabanki. Kudos, girl! pic.twitter.com/udYlEQgM1y
উন্নাও ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। গত রবিবার জেলবন্দি কাকাকে দেখতে রায়বরেলিতে যাচ্ছিলেন উন্নাওয়ের নির্যাতিতা। সঙ্গে ছিলেন দুই আত্মীয় ও আইনজীবী। কিন্তু, রাস্তায় নম্বর প্লেটে কালো কালি লাগানো একটি ট্রাক উলটোদিক থেকে এসে তাঁদের গাড়িকে ধাক্কা মারে। এর জেরে মৃত্যু হয় ধর্ষিতার দুই আত্মীয়ের। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন নির্যাতিতা ও তাঁর আইনজীবী। এদিকে সুপ্রিম কোর্ট গাড়ি দুর্ঘটনা সম্পর্কে সমস্ত তথ্য আজ, বৃহস্পতিবারই সিবিআইকে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে যে চিঠি পাঠানো হয়েছিল, তা কেন সময়মতো পৌঁছায়নি, জানতে চান রঞ্জন গগৈ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.