ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুরুটা ছোট থেকেই হয়। তার পর দীর্ঘ চড়াই উতরাই পেরিয়ে ধীরে ধীরে আসে সাফল্য। পৃথিবীর চিরাচরিত এই নিয়মের ব্যতিক্রম নন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ও (D Y Chandrachud)। শীর্ষ আদালতে এক মামলার শুনানি চলাকালীন তিনি ফাঁস করলেন সাফল্যের পিছনে লুকিয়ে থাকা লড়াইয়ের গল্প। জানা গেল, আইনজীবী হিসেবে জীবনের প্রথম মামলা তিনি লড়েছিলেন বম্বে হাই কোর্টে (Bombay High Court)। সেই প্রথম মামলায় মাত্র ৬০ টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন তিনি।
দেশের একাধিক রাজ্যে বার কাউন্সিলে আইনজীবীদের অন্তর্ভুক্তির জন্য চড়া মূল্য ধার্য করা হচ্ছে। এমনই অভিযোগে শীর্ষ আদালতে দায়ের হয়েছিল একটি জনস্বার্থ মামলা। সোমবার এই মামলার শুনানি চলছিল দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে। মামলার শুনানিতে আদালতের তরফে পর্যবেক্ষণ, আইনে স্নাতক হওয়ার পর বার কাউন্সিলে অন্তর্ভুক্তির জন্য ৬০০ টাকার বেশি চার্জ নেওয়া উচিত নয়। এপ্রসঙ্গেই নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন প্রধান বিচারপতি। জানান, ১৯৮৬ সালে হার্ভার্ড থেকে আইন পাশ করে বম্বে হাই কোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করেন তিনি। সেই সময়ে বিচারপতি সুজাতা মনোহরের বেঞ্চে চলছিল তাঁর প্রথম মামলা। আর এই মামলার জন্য মাত্র ৬০ টাকা পারিশ্রমিক পান তিনি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, সেই সময়ে আইনজীবীরা সাধারণত টাকায় নয়, সোনার মোহরে ফি চাইতেন। আইনজীবীরা মক্কেলদের পক্ষে দেওয়া মামলার ব্রিফিং ফাইলে একটি সবুজ ডকেট অন্তর্ভুক্ত করতেন যার গায়ে টাকার পরিবর্তে “জিএম” (গোল্ড স্ট্যাম্প) লেখা থাকত। সেখানে আইনজীবীরা তাঁদের ফি লিখতেন ‘জিএম’-এ। তখন একটি সোনার মোহরের দাম ছিল প্রায় ১৫ টাকা। তরুণ বিচারপতি চন্দ্রচূড় প্রথম মামলার ডকেটে “৪ জিএম” লিখেছিলেন। যার অর্থ ৬০ টাকা। জানা যাচ্ছে, ২৫ বছর আগে এই পদ্ধতিতে টাকা নেওয়ার চল ছিল বম্বে হাই কোর্টে। সেই সময় বম্বে হাই কোর্টের তুলনায় কলকাতা হাই কোর্টে এক জিএমের দাম ছিল ১৬ টাকা।
এদিকে মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, বার কাউন্সিলে আইনজীবীদের অন্তর্ভুক্তির মূল্যে কোনও সামঞ্জস্য নেই রাজ্যগুলিতে। কেরল, মহারাষ্ট্র, দিল্লির মতো রাজ্যগুলিতে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়। ওড়িশা-সহ একাধিক রাজ্যে এটা ৪১ হাজার টাকা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এভাবে টাকা তোলা ঠিক নয়। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘নাম নথিভুক্ত করণের শুল্ক বাড়ানোর কাজ সংসদের। এভাবে টাকা নেওয়া উচিত নয়। এক্ষেত্রে ৬০০ টাকার বেশি আপনারা নিতে পারেন না।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.