সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আজ, সোমবার বহু বিতর্কিত নাগরিক (সংশোধনী) বিল পেশ হতে চলেছে লোকসভায়। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিলটি ঘিরে তপ্ত হবে কক্ষ। বিল পেশ করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গত বুধবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বিলটিতে সবুজ সংকেত দেয়। তার আগে থেকেই একদিকে যেমন শাসকপক্ষ প্রচারে নেমেছে, তেমনই বিলটির বিরোধিতা করে ময়দানে নেমেছে বিরোধী শিবির। ফলে লোকসভায় বিল পেশ ‘সেমিফাইনাল’ হিসাবে দেখা হচ্ছে। এখানে বিলটি পাশ হলে রাজ্যসভায় ‘ফাইনাল’।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বারও সংখ্যার জেরে লোকসভায় বিলটি পাশ করাতে মোদি সরকারের কোনও সমস্যা হবে না। তবে রাজ্যসভায় পাশ করানোটা শাসকপক্ষের কাছে ‘চ্যালেঞ্জ’ বলেই তাঁরা মনে করছেন। আর তার জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই ঘর গোছানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে বিজেপি শিবির। ফ্লোর ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে সেটিও উতরে যেতে চাইছে সরকার। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, ডিএমকে, আরজেডির মতো দলগুলি বিলটির বিরোধী। অন্য কয়েকটি বিরোধী দলেরও সেদিকেই হাঁটার সম্ভাবনা। তাই আপাতত এনডিএ-র বাইরে রয়েছে অথচ বিরোধী জোটে নেই, এমন দলগুলির সমর্থন জোগাড়ের চেষ্টায় শাসকপক্ষ। বিজেডি, এআইএডিএমকের সঙ্গে ইতিমধ্যেই নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলে সমর্থন করার বিষয়ে সরকার পক্ষের কথাবার্তা একপ্রকার পাকা হয়ে গিয়েছে বলে রাজনৈতিক সূত্রে খবর। বিজেপি বিলটি সংসদে পেশের সময় দলীয় সাংসদদের উপস্থিত থাকা জরুরি বলে জানিয়ে দিয়েছে।
বিলটি গত লোকসভায় পাশ হলেও তা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক অব্যাহত। বিলে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় পীড়নের কারণে এ দেশে শরণার্থী হিসেবে হিন্দু, পার্সি, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা আশ্রয় নিতে বাধ্য হলে তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। সেখানে প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা মুসলিমদের বিষয়ে কোনও উল্লেখ নেই। ধর্মীয় নিপীড়ন থেকে বাঁচতে এ দেশে আশ্রয় নেওয়া অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ বলেই জানাচ্ছে সরকার পক্ষ। নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলটি প্রথম মোদি সরকারের আমলেই লোকসভায় পেশ হয়। নিম্নকক্ষে তা পাসও হয়ে যায়। কিন্তু বিরোধীদের আপত্তিতে তা আর রাজ্যসভায় পেশ করা যায়নি। নিয়ম অনুযায়ী লোকসভার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বিলটিরও মেয়াদ ফুরায়। ফলে নতুন লোকসভায় তা আবার পেশ করা হবে। এ জন্য আবার নতুন করে মন্ত্রিসভার অনুমোদন দরকার হয়। বস্তুত বিল নিয়ে গত কয়েকদিনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব মুখ্যমন্ত্রী ও বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে একশো দশ ঘণ্টারও বেশি বৈঠক করেছেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: সোমবার সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ, কী রয়েছে অসমের বাঙালির ভাগ্যে?]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.