ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে প্রতিবেশী ৩ দেশের অমুসলিম নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে কেউ যদি মিথ্যা ধর্মীয় পরিচয় দিয়ে ভারতের নাগরিকত্ব নেওয়ার চেষ্টা করেন তাহলে কোন পন্থায় চিহ্নিত করা হবে তাঁকে? মোদি সরকারকে তার সমাধান বাতলে দিয়ে চরম বিতর্কিত মন্তব্য করলেন প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা বিজেপি নেতা তথাগত রায় (Tathagata Roy)। নাগরিকত্ব দেওয়ার আগে পুরুষদের যৌনাঙ্গ পরীক্ষার দাবি তুললেন তিনি। সোমবার এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah) ট্যাগ করে এই সংক্রান্ত পরামর্শও দিয়েছেন তথাগত রায়। তাঁর এহেন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তৃণমূল। শাসকদলের তরফে জানানো হয়েছে, তথাগতর মন্তব্য রুচিহীন, অশালীন। দেশে ধর্মীয় ভেদাভেদকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছেন উনি।
যদিও এমন পরামর্শের কোনও কারণ তথাগত উল্লেখ না করলেও, তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট যে অবৈধভাবে ভারতে এসে বসবাসকারী মুসলিমদের নাগরিকত্ব আটকাতেই এ কথা বলেছেন তিনি। অবৈধভাবে ভারতে এসে বসবাস করা মুসলিমদের কীভাবে চিহ্নিত করা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নানা মহলে। এই পরিস্থিতিতে পুরুষদের যৌনাঙ্গ পরীক্ষার পরামর্শ যে মুসলিমদের জন্য তা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ মুসলিম পুরুষদের পুরুষাঙ্গে সুন্নৎ করা থাকে। ছোটবেলাতেই বেশিরভাগের পুরুষাঙ্গের উপরের চামড়া কেটে ফেলা হয়। ইসলামিক চিকিৎসা রীতি অনুযায়ী এর ফলে যৌনাঙ্গকে সংক্রমণ মুক্ত রাখা সহজ হয়। তথাগতর দাবি অনুযায়ী, এভাবে পুরুষাঙ্গ পরীক্ষা হলে মুসলিম পুরুষদের সহজে ধরে ফেলা সম্ভব। এবিষয়ে অবশ্য মহিলাদের তালিকা থেকে বাদ রেখেছেন বিজেপি নেতা। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, পুরুষদের পরিচয় চিহ্নিত করা গেলেই মহিলাদের নাগরিকত্ব দিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
I had suggested checking whether a male is circumcised or not when his religion is in doubt. Because Muslims are completely excluded from CAA. I stick to what I posted.
The resulting explosion, mostly from Muslims, suggests one of two things.
Either a lot of Muslims wanted to…
— Tathagata Roy (@tathagata2) March 18, 2024
যদিও তথাগতর এমন অশালীন পরামর্শকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে ওয়াকিবহাল মহল। কারণ চিকিৎসকদের মতে শুধু মুসলিমদের নয়, বহু অমুসলিমদেরও সুন্নৎ করাতে হয় প্রয়োজন অনুযায়ী। যাদের ফিমোসিস রয়েছে তাঁদের পুরুষাঙ্গের উপরের চামড়া জোড়া থাকে। চিকিৎসকরা অপারেশন করে যৌনাঙ্গের উপরের চামড়া কেটে ফেলেন। সেক্ষেত্রে তাঁদের ধর্মীয় পরিচয় কী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
অবশ্য ভারত ও বাংলাদেশ ধর্মীয় হিংসার ঘটনায় এই ধরনের পন্থা একাধিকবার দেখা গিয়েছে। ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময়ে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের উপর দুষ্কৃতীদের হামলায় পুরুষদের যৌনাঙ্গ পরীক্ষার ঘটনা ঘটেছিল বলে জানা যায়। পাশাপাশি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও হিন্দুদের চিহ্নিত করতে এই যৌনাঙ্গ পরীক্ষার পন্থা অবলম্বন করেছিল পাকিস্তানের সেনা। এবার বিজেপি নেতা তথাগতর এহেন পরামর্শ স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক তৈরি করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.