সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অগস্টা ওয়েস্টল্যান্ড হেলিকপ্টার কেলেঙ্কারিতে অন্যতম অভিযুক্ত ক্রিশ্চিয়ান মিশেলকে দিল্লিতে আনা হল। মঙ্গলবার রাতে দুবাই থেকে বিশেষ বিমানে তাঁকে নিয়ে আসার পর সিবিআই সদর দপ্তরে জেরা শুরু হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে মঙ্গলবার বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের কথার পরই মিশেলকে দিল্লিতে আনার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যায়। এক বছর আগেই দুবাইতে গ্রেপ্তার হন মিশেল। পরে জামিনে মুক্ত ছিলেন।
ব্রিটিশ নাগরিক ও অস্ত্র ব্যবসার মধ্যস্থতাকারী মিশেল ভারতের কাছে গত ছয় বছর ধরেই মোস্ট ওয়ান্টেড ছিলেন। তিনি ৩,৬০০ কোটি টাকার অগস্টা ওয়েস্টল্যান্ড হেলিকপ্টার কেনার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান মধ্যস্থতাকারী। মিশেল ছাড়াও আরও দু’জন মধ্যস্থতাকারী এই কেলেঙ্কারিতে যুক্ত। ইউপিএ জমানায় ঘটা বহু আর্থিক কেলেঙ্কারির অন্যতম ছিল এই কপ্টার কেলেঙ্কারি। লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় সরকারের তৎপরতায় মিশেল সিবিআইয়ের হাতে চলে আসায় কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়তে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
সিবিআই ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) অগস্টা ওয়েস্টল্যান্ড কপ্টার কেলেঙ্কারি নিয়ে তাদের চার্জশিট পেশ করেছিল ২০১৬ সালের জুন মাসে। তাতে তারা স্পষ্ট জানায়, কপ্টার কেনার জন্য ভারত সরকারের সঙ্গে চুক্তির সময় মিশেল অগস্টার কাছ থেকে ৩০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ২২৫ কোটি টাকা) নেন ভারতীয় রাজনীতিবিদ ও বায়ুসেনার অফিসারদের ঘুষ দিতে। এছাড়া আরও দুই মধ্যস্থতাকারী গুইদো হাশকে এবং কার্লো জেরোসা এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত। চার্জশিট পেশের পরই সিবিআইয়ের অনুরোধে মিশেলের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করে ইন্টারপোল। মিশেল দুবাইতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁর আইনজীবী অভিযোগ করেছিলেন, ভারতীয় গোয়েন্দারা তাঁকে টোপ দিচ্ছেন, এই মামলায় সোনিয়া গান্ধীর নাম জড়ানোর জন্য।
ইন্টারপোল ও দুবাই পুলিশের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে নথিপত্র সমেত হেফাজতে নেন সিবিআই অফিসাররা। মিশেলকে দিল্লিতে নিয়ে আসতে পারা নরেন্দ্র মোদি সরকারের বড় সাফল্য হিসাবে দেখা হচ্ছে। মিশেলকে জেরা করে কপ্টার কেলেঙ্কারির আরও অনেক তথ্য জানা যাবে বলে মনে করছে সিবিআই। জড়াতে পারে কিছু হেভিওয়েট নেতারও নাম। ইতালীয় কপ্টার নির্মাতা সংস্থা হল ফিনমেকানিকা। তাদের অনুসারী ব্রিটিশ সংস্থা হল অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড। অগস্টার সঙ্গেই ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ৩,৬০০ কোটি টাকায় ১২টি কপ্টার কেনার চুক্তি করেছিল মনমোহন সিংয়ের সরকার। কিন্তু ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি এই চুক্তি বাতিল করে ভারত। সিবিআইয়ের অভিযোগ ছিল, এই কপ্টার কিনতে গিয়ে রাজকোষের ২,৬৬৬ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। মামলার তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয় ইউপিএ আমলেই। মামলায় ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছেন তৎকালীন বায়ুসেনা প্রধান এস পি ত্যাগী, তাঁর ভাই সঞ্জীব ত্যাগী এবং তাঁদের আইনজীবী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.