অর্ণব আইচ: ভারত মহাসাগরে ক্রমশ আগ্রাসী হচ্ছে ‘ড্রাগন’। ‘আঙ্কল স্যাম’কে সমানে টেক্কা দিয়ে আন্তর্জাতিক জলসীমায় সদর্পে টহল দিচ্ছে চিনা রণতরী। ফলে চিন্তার ভাঁজ বাড়ছে ভারতের প্রতিরক্ষা মহলে। সোমবার পশ্চিমবঙ্গের ‘নাভাল অফিসার ইনচার্জ’ কমোডর সুপ্রভ কুমার দে জানান, ভারতীয় জলসীমার আশপাশে চিনা রণতরীগুলির গতিবিধি ক্রমেই বাড়ছে। ফলে ওই বিস্তীর্ণ জলরাশিতে যে কোনও আগ্রাসন ঠেকাতে টহল দিচ্ছে ভারতীয় নৌসেনার একাধিক সাবমেরিন।
সম্প্রতি, আন্দামান ও নিকোবরের কাছে ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়ে লালফৌজের একটি জাহাজ। তবে ভারতীয় নৌসেনা সতর্ক থাকায় সেটি নজরে পড়ে যায়। তারপরই ওই জাহাজটিকে দেশের জলসীমা থেকে বের করে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, ২০১৭ থেকেই আমেরিকা ও চিনের মধ্যে ভারত মহাসাগরে আধিপত্যের লড়াই চরমে পৌঁছেছে। এশিয়া মহাদেশের অন্যতম শক্তিধর দেশ হিসেবে এই সমীকরণে ঢুকে পড়েছে ভারতও। তাছাড়া শ্রীলঙ্কার হামবানটোটা ও পাকিস্তানের গদর বন্দরে চিনা সাবমেরিন ও যুদ্ধজাহাজের আনাগোনা যে দিল্লির উদ্বেগের বিষয় তা স্পষ্ট। এহেন পরিস্থিতিতে, মঙ্গলবার কলকাতায় একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে নৌসেনা। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের ‘নাভাল অফিসার ইনচার্জ’ কমোডর সুপ্রভ কুমার দে সাফ বলেন, ‘ভারত মহাসাগরে লালফৌজের রণতরীগুলির আনাগোনা বেড়েছে। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে নৌসেনা। এই মুহূর্তে ভারতীয় জলসীমায় যে কোনও আগ্রাসন ঠেকাতে টহল দিচ্ছে আমাদের সাবমেরিন।’ একই সঙ্গে কমোডর দে আরও জানান যে, সুন্দরবনে জঙ্গিদের গতিবিধির উপরও নজর রাখছে নৌসেনা। উল্লেখ্য, নৌসেনার ইস্টার্ন নাভাল কমান্ডের আওতায় পড়ে পশ্চিমবঙ্গ। বাংলাদেশ সংলগ্ন সুন্দরবন এলাকায় চলা জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন দেশের সবচেয়ে বড় নাভাল কমান্ড।
আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে চিনা সেনার হাতে প্রায় ৬৫টি সাবমেরিন রয়েছে। যার মধ্যে ৮ থেকে ১০টি পারমাণবিক শক্তিচালিত। তুলনায় ভারতের হাতে এই মুহূর্তে কর্মক্ষম মাত্র ৮টি সাবমেরিন রয়েছে। তবে ভারতের হতেও পারমাণবিক সাবমেরিন অরিহন্ত রয়েছে। অরিহন্তে রয়েছে ‘কে-১৫’ (সাগরিকা) আণবিক মিসাইল৷ প্রায় ৭৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত নিখুঁতভাবে লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র৷ আক্রমণের জন্য পর্যাপ্ত না হলেও ভারতীয় নৌবহর দেশের জলসীমা রক্ষার জন্য সম্পূর্ণ তৈরি।
[আরও পড়ুন: দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে জোর, দিল্লিতে সুইডেনের রাজা-রানির সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদি]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.