সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের প্রকাশ্যে চিনের স্বরূপ। লাদাখ সীমান্ত নিয়ে আলোচনা চললেও, ৪ হাজার কিলোমিটার লম্বা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ফৌজ মোতায়েন করল বেজিং। পালটা হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশে চিন সীমান্তে সৈন্য সংখ্যা বাড়িয়ে তুলেছে নয়াদিল্লি।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, ভারতীয় সেনার এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, লাদাখ ছাড়াও ভারতের সঙ্গে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সমস্ত জায়গায় সেনা মোতায়েন করেছে চিন। ফরওয়ার্ড পজিশনের পিছনেই সাঁজোয়া গাড়ি, কামান ও ভারি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তৈরি রয়েছে লাল ফৌজের অতিরিক্ত বাহিনী। এর জবাবে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সব সেক্টরেই ‘ফাইটিং ফর্মেশন’ (লড়াকু বাহিনী) মোতায়েন করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ইতিমধ্যে হিমাচল প্রদেশের দায়িত্বে থাক কোরের একটি রিজার্ভ ব্রিগেডকে লাদাখ সেক্টরে পাঠানো হয়েছে। সেখানে কারুতে মোতায়েন সেনার তিনটি ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনকে মদত দেবে এই ব্রিগেড।
উত্তরাখণ্ডে চিনা সেনার আগ্রাসন ঠেকাতে হারসিল-বারাহোতি-নেলাঙ ভ্যালি সেক্টরে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে ভারত। গত মাসেই ওই এলাকায় লাল ফৌজের হেলিকপ্টারের গতিবিধি দেখা গয়েছিল। এদিকে, ইস্টার্ন সেক্টরে চিকেন্স নেক করিডর থেক শুরু করে অরুণাচল পর্যন্ত সুরক্ষার জন্য সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছে ৩৩ কোর, ৪ কোর, একটি ব্রিগেডকে। পাশাপাশি, যে কোনও মুহূর্তে সীমান্তে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৭ মাউন্টেন স্ট্রাইক কোরকে। একই সঙ্গে, যুদ্ধ বাঁধলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে চিনা ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমেরিকার তৈরি হালকা হাউৎজার কামানও মোতায়েন করেছে ভারতীয় ফৌজ।
৬ জুন দু’দেশের মধ্যে হওয়া মেজর জেনারেল স্তরের বৈঠকের পর গালওয়ান এলাকা, পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪, ১৫ ও হট স্প্রিং এলাকায় সংঘর্ষের কেন্দ্র থেকে আড়াই কিলোমিটার পিছিয়ে গিয়েছে চিনা সেনাবাহিনী। ওই সব এলাকা থেকে ফৌজ সরিয়েছে ভারতও। আরও সেনা সরানোর কাজ চলছে। ধীরে ধীরে লাদাখ সীমান্তে কমছে চিনা সেনার সংখ্যা। ফলে দুই দেশের মধ্যে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। সরাসরি সংঘাতের রাস্তায় না হেঁটে কূটনৈতিক তথা সামরিক স্তরে আলোচনার মাধ্যমে বিবাদ মিটিয়ে নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে নয়াদিল্লি ও বেজিং। এহেন পরিস্থিতিতে অরুণাচল-সহ অন্য এলাকায় চিনা সেনার আগ্রাসী মনোভাবে ফের ঘোরাল হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.