Advertisement
Advertisement

Breaking News

Chhow

ছৌ নাচের বিভঙ্গে ‘ভুবন’জয়ী পুরুলিয়ার ভুবন, রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পেলেন পুরস্কার

শিবের ভূমিকায় মঞ্চ কাঁপান ভুবনবাবু।

Chhow dancer of Purulia awarded by the President for his long time contribution to alive this folk dance | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:February 23, 2023 9:29 pm
  • Updated:February 23, 2023 9:29 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ঢোলবাদককে ২৫ পয়সা দিয়ে ছৌ নাচ (Chhow) শিখতেন তিনি। ছেলেবেলা থেকেই শিব নাচতে ভালবাসতেন। ছৌ পালা কানে এলেই আর নিজেকে ধরে রাখতে পারতেন না। বীররসের ছৌ মুদ্রায় নিজেকে মেলে ধরতেন। প্রায় ১২ বছর বয়স থেকে ছৌ নাচ শেখা পুরুলিয়ার (Purulia) কোটশিলা থানার বামনিয়া গ্রামের ভুবন কুমার সংস্কৃতি মন্ত্রকের তরফে ২০২১-র সংগীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেলেন। বৃহস্পতিবার নিউ দিল্লির বিজ্ঞান ভবনের প্লেনারি হলে দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছ থেকে এই পুরস্কার হাতে পান ভুবন।

কোভিডের (COVID-19) কারণেইবছর দুয়েক পর এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। পুরুলিয়ার ছৌ শিল্পীর এই সম্মানে শুধু এই জঙ্গলমহলের জেলা নয়, গর্বিত গোটা বাংলা। খুশি রাজ্যের লোকশিল্পীরাও। শুক্রবার দুপুরের মধ্যেই বামনিয়া গ্রামে নিজের বাড়িতে পা রাখবেন তিনি। জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের আধিকারিক সিদ্ধান্ত চক্রবর্তী বলেন, “ভুবন কুমার সত্যিই আমাদের গর্ব। নৃত্য কলা জগতে ছৌ ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে। রাজ্যের ফ্ল্যাগশিপ লোকপ্রসার প্রকল্পের মাধ্যমে এই শিল্পের গরিমা আরও বেড়েছে।পুরুলিয়ার ভুবন আজ ‘ভুবন’জয়ী।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: গল্প হলেও সত্যি, এই বাঙালি দম্পতির জীবন কাহিনি থেকেই তৈরি ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’]

ছেলেবেলা থেকেই শিব (Lord Shiva)সেজে সেই নাচে পারদর্শী ছিলেন ভুবন। আজ ৬১ বছর বয়সেও শিব নৃত্যে মঞ্চ কাঁপান তিনি। তবে শুধু শিব নয়। গণেশ, কার্তিক, দুর্গা, মহিষাসুর – বিভিন্ন চরিত্রে তিনি ছাপ ফেলেছেন। তিনি আসলে ছৌ নাচের ওস্তাদ। শুধু শিল্পী নন। পালা রচনা থেকে শুরু করে সুর দেওয়া, বাদ্যযন্ত্র বাজানো সবকিছুতেই তিনি পারদর্শী। তাই পুরুলিয়ার ছৌ শিল্পী ভুবন আজ ‘ভুবন’ জয়ী। তার শিল্পকলায় আক্ষরিক অর্থেই ভুবন মাতোয়ারা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিল্লির (Delhi) মেঘদূত ভবনে একটি অনুষ্ঠানে হাজির থাকার সময় তিনি বলেন, “খুবই ভালো লাগছে। ছৌ নৃত্য তো আগেই বিদেশে সমাদৃত। আমরা সেই ধারাটা বজায় রেখেছি। ছৌ নাচকে ঘিরে এই গর্ব আমরা ধরে রাখব।”

ভুবনের দাদু থেকে বাবা, সকলেই এই শিল্পকলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তখন কোটশিলার বামনিয়া গ্রামে একটি মাত্র নাচের দল ছিল। বড়দের নাচ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে গ্রামের সহপাঠীদের নিয়ে নিজের উদ্যোগে অনুশীলন শুরু করেছিল বছর বারোর ভুবন। ঢোল বাদককে ২৫ পয়সা দিয়ে চলত অনুশীলন। সবই চলত পরিবারের অজান্তে। যখন এই বিষয়টা সামনে এল, তখন কিন্তু কেউ কোনও বাধা দেননি। সকলেই উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন। তারপরেই ভুবন গ্রামের দলে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর নাচের প্রশংসায় তখন পঞ্চমুখ সকলেই। ১৯৮৫ সালে তাঁর বাবা প্রয়াত প্রভুদাস কুমারের হাত ধরে ‘সূর্য তরুণ ছৌ নৃত্য’ নতুন দল গঠন করেন। আজ সেই দল জেলার অন্যতম নামকরা। ভুবনের দুই ছেলেও এই নৃত্যের শিল্পী।

[আরও পড়ুন: স্বচ্ছভাবে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি, আগামী মাসে বিধাসভা অভিযানে নামছে SFI]

অতীতে ছৌ নাচ মূলত পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে আবর্তিত ছিল। সেখান থেকে ওস্তাদ ভুবন অন্যরকম পালা রচনা করে দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন। যার মধ্যে ‘সাঁওতাল বিদ্রোহ-সিধু-কানহু’, ‘নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁ’, ‘কার্গিল যুদ্ধ’ অন্যতম উল্লেখযোগ্য। ভুবন এখনও পর্যন্ত তাঁর শিল্পকলাকে নিয়ে বিদেশে পাড়ি দিতে না পারলেও রাজ্যের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছৌ বিভঙ্গে মাতিয়ে দিয়েছেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement