Advertisement
Advertisement
ছত্তিশগড়

বাঙালি চিকিৎসকদের হাত ধরে প্রত্যন্ত ছত্তিশগড়ে ফিরেছে স্বাস্থ্য পরিষেবা

ছত্তিশগড়ের এই হাসপাতাল এখন আদর্শ চিকিৎসাকেন্দ্র৷

Chhattisgarh's 'Shaheed Hospital becomes ideal for health infrastructure
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 15, 2019 8:18 pm
  • Updated:April 15, 2019 8:18 pm  

তরুণকান্তি দাস, ছত্তিশগড়: ছত্তিশগড়ের দল্লিরাজহরা। কয়লাখনি ও ইস্পাত কারখানা অধ্যুষিত এলাকা৷ এখানে ‘শহিদ হাসপাতাল৷’ উদ্বোধনের দুই শ্রমিকের নাম ফলকে৷ তাঁদের হাত দিয়েই উদ্বোধন করানো হয়েছিল৷ এখানে শ্রমিক আন্দোলন গড়ে ওঠে এক বাঙালির হাত ধরে৷ তিনি শংকর গুহ নিয়োগী৷ বাড়ি জলপাইগুড়ি৷

এখানে কোনও চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিলই না৷ শংকরের নেতৃত্বে শ্রমিকরা সিদ্ধান্ত নেন হাসপাতাল গড়ার৷ ডাক্তার শৈবাল জানা ১৯৮১ সালে চলে আসেন এখানে৷ সঙ্গী আরও চার ডাক্তার৷ ছিলেন ডাক্তার বিনায়ক সেন৷ প্রথমে ভাবা হয় প্রসূতি ভবন হবে৷ কেন? তখন এখানের শ্রমিক সংগঠন ছত্তিশগড় মুক্তি মোর্চার সহ-সভাপতি কুসুম বাই প্রসব করাতে ভিলাই যান৷ কিন্তু চিকিৎসা মেলেনি৷ মারা যান৷ তখন ঠিক করা হয়, প্রথমে প্রসূতিদের চিকিৎসা চাই৷ আগে বিনায়ক সেন, আশিস কুণ্ডুরাও আসেন৷

Advertisement

                 [ আরও পড়ুন : নেহেরু-ইন্দিরারা যখন সেনা তৈরি করেন, তখন মোদি প্যান্ট পরাও শেখেননি: কমল না]

গ্রামের মানুষ, শ্রমিকদের নিয়ে দুটি স্লোগান ঠিক হয় – স্বাস্থ্য আন্দোলন চলে তার ভিত্তিতে৷ ১৯৮২ সালের ১৫ অগাস্ট ডিসপেনসারি শুরু হয়৷ তখন ছিলেন তিনজন ডাক্তার – বিনায়ক সেন, আশিস কুণ্ডু, শৈবাল জানা৷ তাঁদের হাতে শ্রমিক সংগঠন ২ হাজার টাকা দিয়ে বলে, ‘এই হল মূলধন৷’ আর চিকিৎসকদের টাকা? বেতন? বলা হয়, ‘হাসপাতালের চৌকিদার রেঁধে দেবে, আপনারা খাবেন৷’ এবার গ্রামের ১০৯ জনকে নিয়ে স্বাস্থ্য কমিটি তৈরি হয়৷ এর পাশাপাশি স্কুল গড়া, খেলোয়াড় তৈরির কাজ শুরু হয়৷ ১০৯ জনের পাশাপাশি অনেকে স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে পরিষেবা দিতে থাকেন, খনিতে কাজ করার পাশাপাশি৷

[ আরও পড়ুন : চোখে আঘাত করে সাংবাদিকের ছেলেকে খুন, নৃশংস ঘটনায় বিহারে চাঞ্চল্য]

১৯৮৩ সালে হাসপাতাল চালু হল৷ তখন শ্রমিক সংগঠন ১০ হাজার টাকা দেয় হাসপাতালের প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার জন্য৷ সেসব কেনা হয় কলকাতার মুখার্জি-ব্যানার্জি স্টোর থেকে৷ এরপর শ্রমিকরা বলল, হাসপাতালের সম্প্রসারণে মাইনিং অ্যালাউয়েন্সের অংশ দেব৷ মিলল সাড়ে তিন লাখ টাকা৷ সেই টাকার হাসপাতালের ট্রাক কেনা হল৷ তার আয় এল হাসপাতালে৷ দুটি অপারেশন থিয়েটার তৈরি হল৷ ছাদ ঢালাই অর্ধেক হয়ে পড়ে রয়েছে৷ ওই সময় শংকর গুহ নিয়োগীর পা ভাঙে৷ তার চিকিৎসায় অনেক টাকা লাগে৷ কিন্তু ভিলাই হাসপাতাল কোনও টাকা নেয়নি৷ সেই টাকা এল এই হাসপাতালে৷

জনকলাল ঠাকুর বিধায়ক হওয়ার পর সব টাকা যায় হাসপাতালে৷ এখন হাসপাতাল কর্মী ১১৫ জন, ডাক্তার ১১ জন৷ প্রতিদিন ওপিডি-তে ২৫০ থেকে ৩৫০ জন দেখাতে আসেন৷ নতুন রোগী হলে ২০ টাকা, পুরনো হলে ১০ টাকা৷ এনিয়ে ১৩ তারিখ অর্থাৎ সদ্যই বৈঠক হয়৷ এবার থেকে ওপিডি-তে দেখানোর চার্জ বেড়ে হচ্ছে ৪০ এবং ২০ টাকা৷ এখন শয্যাভাড়া ৫ টাকা, বাকি পরিষেবার জন্য লাগে মাত্র ২৫ টাকা৷ সব পরিকাঠামো আছে৷ বছর পাঁচেক আগে একটি ট্রাস্ট তৈরি হয়৷ এখন হাসপাতাল ট্রাস্টের হাতে৷

[ আরও পড়ুন : সাম্প্রদায়িক মন্তব্যের জের, ৭২ ঘণ্টার জন্য যোগীর প্রচারে নিষেধাজ্ঞা কমিশনের]

জেলা হাসপাতালে যা পরিষেবা পাওয়া যায়, এখানে সব পাওয়া যায়৷ তবে মূল হয় প্রসূতি বিভাগ৷ ছত্তিশগড় সরকার মেটারনিটি ট্রেনিং দেয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকর্মীদের৷ এখন গোটা হাসপাতালের দায়িত্বে ডাক্তার শৈবাল জানা৷ চিকিৎসার ব্যবস্থা এতই ভাল যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকরা এখানে এসে প্র্যাকটিকাল ক্লাস করেন৷  

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement