নিজস্ব চিত্র।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাওবাদীদের দাপটে ২১ বছর বন্ধ ছিল। রামমন্দিরকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতেও চেয়েছিল মাওবাদীরা। অবশেষে সেই রামমন্দিরের দরজা খুলল রামনবমীর ঠিক আগেই। ছত্তিশগড়ের (Chhattisgarh) সুকমার রামমন্দিরে ফের ভিড় জমালেন স্থানীয় ভক্তরা। বিগ্রহ পরিষ্কার করে ফের শুরু হল পূজার্চনা।
সুকমার (Sukma) কেরলাপেন্ডা গ্রামে অবস্থিত এই মন্দির। একটা সময়ে ওই এলাকাই হয়ে উঠেছিল মাওবাদীদের মুক্তাঞ্চল। উচ্চপর্যায়ের গোপন বৈঠক থেকে শুরু করে সুরক্ষিত করিডর গড়ে যাতায়াত-মাওবাদীদের (Maoist) সমস্ত কার্যকলাপ হয়েছে এই মন্দির সংলগ্ন এলাকায়। সেই জন্যই বন্ধ করে দেওয়া কেরলাপেন্ডার রামমন্দির। একটা সময়ে যে মন্দির ঘিরে মেলা বসত, সেই মন্দিরের ধারপাশ না মাড়ানোর নির্দেশ দেয় মাওবাদীরা। ২০০৩ সাল থেকে গ্রামের কেউই ওই মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেননি। কেবল একজন গ্রামবাসী প্রতিদিন মন্দিরের (Ram Temple) সামনে প্রদীপ জ্বালিয়ে দিতেন। উল্লেখ্য, ২০১০ সালে এই গ্রাম থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে ৭৬ জন জওয়ান খুন হয়েছিলেন। ২০২১ সালেও রক্তাক্ত হয়েছিল গ্রাম সংলগ্ন এলাকা।
তবে দিন কয়েক আগে পালটেছে ছবিটা। মাসখানেক জঙ্গলে ঘেরা এই এলাকায় বসে সিআরপিএফ ক্যাম্প। নিয়ম করে এলাকায় টহল দিতে শুরু করেন জওয়ানরা। সেই সময়েই বন্ধ মন্দিরটি তাঁদের নজরে পড়ে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে তাঁরাই জানতে পারেন মন্দির বন্ধের ইতিহাস। ২০০৩ সালে এই মন্দির ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল মাওবাদীরা, সেই কথাও জানান গ্রামবাসীরা। প্রসঙ্গত,সিআরপিএফ ক্যাম্প তৈরির আগে গ্রামের বাইরের কারও সঙ্গে কথা বলতেন না বাসিন্দারা।
সেই সময়ই সিআরপিএফ জওয়ানদের কাছে মন্দিরটি ফের খুলে দেওয়ার আবেদন জানান কেরলাপেন্ডার বাসিন্দারা। ২১ বছর পর গত শনিবার ফের খোলা হয় মন্দিরের দরজা। ভিতরে পাথরে তৈরি ভগবান রাম, লক্ষ্মণ ও মা সীতার বিগ্রহ রয়েছে। সেগুলো ধুয়েমুছে পরিষ্কার করা হয়। শুরু হয় পুজোও। আগামী ১৭ এপ্রিল রামনবমী উপলক্ষে মন্দিরে বিরাট পুজোর আয়োজন করবেন গ্রামবাসীরা। সিআরপিএফ জওয়ানদের মতে, পাথরে তৈরি মন্দিরটি অন্তত ২০০ বছরের পুরনো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.