সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠিক তখন সকাল ১০টা৷ পাঁচ গ্রামের পড়ুয়াদের খাতা-বই হতে উপস্থিত গাছতলায়৷ শিক্ষকও হাজির গাছে ঝোলানো ব্ল্যাকবোর্ডের নিচে৷ সকাল ১০.১০ মিনিটে শুরু স্কুল৷ খোলা আকাশের নিচে গাছতলায় বসে নিয়মিত চলছে ক্লাস৷ স্কুল বাড়ি না থাকলেও নিয়ম করে পড়ুয়ারাও হাজির হয়৷ শিক্ষকও আসনে৷ দিনভর এভাবেই চলছে স্কুল৷
ছত্তিশগড়ের বালামামপুরের জগমমা গ্রাম৷ প্রায় শ’দুয়েক পরিবারের বসবাস মাও অধ্যুষিত এই গ্রামে৷ গ্রামের একপ্রান্ত রয়েছে সরকারি স্কুল৷ খাতায় কলমে স্কুল, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী থাকলেও নেই স্কুল বাড়ি৷ শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, খোলা আকাশের নিচেই চলছে স্কুল৷ শীত কিম্বা গ্রীষ্মে স্কুল চালাতে খুব একটা সমস্যা না হলেও বর্ষা এলেই বাড়ে বিপদ৷ চলে অঘোষিত ছুটি৷ দীর্ঘ ১৭ বছরেও স্কুলবাড়ি নির্মাণ না হওয়ায় চূড়ান্ত আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক৷ তাঁর দাবি, ২০০১ সালে স্কুলটি চালু করা হলেও স্কুলবাড়ি তৈরি হয়নি শিক্ষা দপ্তরের কর্মীদের উদাসীনতার কারণে৷ কিন্তু, স্কুলবাড়ি তৈরি না হলেও বন্ধ হয়নি পঠনপাঠন৷
সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ে এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বালামামপুর জেলা শিক্ষাদপ্তরের আধিকারিকের দাবি, ‘‘মাওবাদীরা ওই স্কুলবাড়িটি ধ্বংস করে দিয়েছিল৷ ওই এলাকায় মাওবাদীদের আতঙ্ক থাকায় স্কুলবাড়িটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া যায়নি৷’’ তবে, যত দ্রুত সম্ভব ওই স্কুলবাড়িটি নির্মাণ করা হবে বলে আশ্বাসও দেন তিনি৷
তবে, কেন এতদিনেও স্কুল বাড়ি নির্মাণে কোনও ব্যবস্থা নিল না কর্তৃপক্ষ? কেন রোদ-জল-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে গাছের নিচে ক্লাস করতে হল? প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ যখন গোটা দেশজুড়ে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে, যখন স্কুলবাড়ি সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণে লক্ষ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে, ঠিক তখনই এই সরকারি উদাসীনতার কারণে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে প্রাথমিক পড়ুয়ারা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.