সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ায় অ্যাম্বুল্যান্সে মৃত্যু পাঁচ বছরের শিশুকন্যার। মৃতের নাম বুলবুল কুদিয়াম। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত বুলবুলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বিজাপুরের জেলা হাসপাতাল থেকে জগদলপুরের মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছিল। সংকটাপন্ন শিশুকন্যা ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থাতে অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। রাস্তাতেই সঙ্গে থাকা সিলিন্ডারের অক্সিজেন ফুরিয়ে যায়। চেষ্টা করেও ঘটনাস্থল লাগোয়া হাসপাতাল থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করতে পারেননি অ্যাম্বুল্যান্স চালক। বুলবুলকে নিয়ে জগদলপুর হাসপাতালে পৌঁছালে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। গোটা ঘটনায় বিজাপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন মৃতের বাবা। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তিশগড়ের রায়পুরে।
জানা গিয়েছে, বুলবুল কুদিয়ামের বাড়ি স্থানীয় টয়নার গ্রামে। সে পার্শ্ববর্তী গ্রাম মাতওয়াদার এক আশ্রম স্কুলে পড়াশোনা করত। সেখানেই জ্বরে পড়ে ওই নাবালিকা। পরিস্থিতি বাড়াবাড়ি হলে বাবা চামরু কুদিয়ামকে খবর দেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ওই শিশুকন্যাকে বস্তারের বিজাপুর জেলা হাসপাতালে ভরতি করা হয় গত বৃহস্পতিবার। এই কয়েকদিনে শিশুটির শারীরিক অবস্থার ক্রমাবনতির কারণে সোমবার রাতে জগদলপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। সেইমতো অ্যাম্বুল্যান্স করে শিশুকন্যাকে নিয়ে রওনা দেন বাবা চামরু কুদিয়াম। বিজাপুর জেলা হাসপাতাল থেকে জগদলপুর মেডিক্যাল কলেজের দূরত্ব ১৬০ কিলোমিটার। ভেন্টিলেশনে থাকা শিশুটিকে নিয়ে যাওয়ার সময় মাঝ রাস্তায় টোকাপাল গ্রামের কাছে সিলিন্ডারের অক্সিজেন ফুরিয়ে যায় বলে অভিযোগ। স্থানীয় হাসপাতাল থেকে নতুন অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড়ের চেষ্টাও করেছিলেন ওই অ্যাম্বুল্যান্স চালক। অভিযোগ, সেখানকার কর্মীরা অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে অস্বীকার করেন। বাধ্য হয়েই বাকি রাস্তা অক্সিজেন ছাড়া যায় অ্যাম্বুল্যান্সটি। হাসপাতালে পৌঁছালে বুলবুলকে পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৬০ কিলোমিটার রাস্তা ভেন্টিলেশনের রোগীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারই যথেষ্ট। সেখানে বুলবুলকে নিয়ে যাওয়া অ্যাম্বুল্যান্সটিতে থাকা সিলিন্ডারে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ছিল না। শুধু তাই নয়, রোগীর সঙ্গে সবসময় একজন চিকিৎসাকর্মী থাকা বাঞ্ছনীয়। যদিও ওই শিশুকন্যার সঙ্গে কোনও চিকিৎসাকর্মী ছিলেন না বলে অভিযোগ। চিকিৎসাকর্মী সমেত নির্দিষ্ট অ্যাম্বুল্যান্স থাকা সত্ত্বেও ওই শিশুকে নিয়ে যাওয়া হয়নি। গোটা ঘটনাটি জানার পর বিজাপুর হাসপাতালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। হাসপাতাল সুপারের রাছে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন বিজাপুরের কালেক্টর কেডি কুঞ্জম। সেই সঙ্গে শিশুটির আশ্রম স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেও রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। সামান্য জ্বর কী করে নিউমোনিয়ায় বদলে গেল তানিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.