সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার থেকে প্রত্যেক ছায়াছবি দেখানোর আগে সব প্রেক্ষাগৃহে জাতীয় সঙ্গীত চালানো বাধ্যতামূলক। মানে, বাধ্যতামূলক উঠে দাঁড়ানোও! না হলেই পড়তে হবে আইনের গেরোয়। সম্প্রতি তেমনটাই অন্তত নিদান দিয়েছে শীর্ষ আদালত!
এবং শীর্ষ আদালতের এই রায়ে বিস্ফোরক মন্তব্যে দেশে তোলপাড় ফেললেন লেখক চেতন ভগত। সাফ টুইটের মাধ্যমে ছুড়ে দিলেন প্রশ্ন- এবার থেকে কি সেস্ক করার আগেও জাতীয় সঙ্গীত গাইতে হবে?
ভাবছেন, জাতীয় সঙ্গীতকে ব্যঙ্গ করছেন লেখক? ঠিক তা নয়। লেখকের জেহাদ আসলে এই জোর করে দেশপ্রেমের পাঁচন খাওয়ানোর বিরুদ্ধে। যা পর পর পাঁচটি টুইটে বেশ ভাল করেই বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।
What if I love my country and anthem, but just like religion, I don’t like to display it in a public manner? Why are you imposing it?
— Chetan Bhagat (@chetan_bhagat) December 1, 2016
“হ্যাঁ, আমি আমার দেশকে ভালবাসি। সম্মান করি জাতীয় সঙ্গীতকেও। কিন্তু সেটা আমার ধর্মাচরণের মতো ব্যাপার। যা আমি প্রকাশ্যে জাহির করতে চাই না। সেক্ষেত্রে জোর করে দেশপ্রেম কেন আমার উপরে চাপিয়ে দেওয়া হবে?” প্রথম টুইটে প্রশ্ন তুলেছেন লেখক।
Why not national anthem before every TV program? Before every play? Why not sing the national anthem before having sex? Ridiculous.
— Chetan Bhagat (@chetan_bhagat) December 1, 2016
এর পরেই লেখক ধরেছেন ব্যঙ্গের পথ। “কেন সমস্ত টিভি সিরিয়াল দেখানোর আগে জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হবে না? কেন নাটক দেখাবার আগে বাজানো হবে না জাতীয় সঙ্গীত? এবার থেকে কি সেক্স করার আগেও জাতীয় সঙ্গীত গাইতে হবে? হাস্যকর!” ক্ষোভ ঝরে পড়ছে লেখকের শব্দে।
Stunned at SC ruling on national anthem before a movie. Imposing nationalism curtails personal freedom, a key part of what India is about.
— Chetan Bhagat (@chetan_bhagat) December 1, 2016
এর পরেই সরাসরি শীর্ষ আদালতকে আক্রমণ করেছে চেতন ভগতের টুইট। “অবাক হয়ে যাচ্ছি, কী ভাবে সুপ্রিম কোর্ট এরকম একটা নির্দেশ জারি করতে পারে! এটাই এখন ভারতের অবস্থা- জোর করে দেশপ্রেম খাওয়ানো!” লিখেছেন তিনি।
Not a legal expert, but don’t know what provision allows SC to interfere in private contract between cinema owner and ticket buying audience
— Chetan Bhagat (@chetan_bhagat) December 1, 2016
তবে, শুধুই শীর্ষ আদালত নয়। পাশাপাশি ভারতীয় আইনবিধি নিয়েও সমালোচনায় মুখর হয়েছেন তিনি। “বুঝতে পারছি না, ঠিক কোন আইনবিধি মোতাবেক প্রেক্ষাগৃহের মালিক আর দর্শকের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের মধ্যে নাক গলাল শীর্ষ আদালত”, টুইট করেছেন তিনি।
Those ready to beat their chests in the name of nationalism and willing to give up their freedoms for it, you will regret it one day. Badly.
— Chetan Bhagat (@chetan_bhagat) December 1, 2016
সবার শেষে চেতন দুশ্চিন্তা করেছেন নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিয়ে। লিখেছেন, “যাঁরা দেশপ্রেমের নামে বুক বাজাচ্ছেন এবং স্বাধীনতা বিসর্জন দিচ্ছেন, একদিন তাঁদের পস্তাতে হবে! খুব খারাপ লাগছে!”
এছাড়াও অবশ্য আরেকটা কথা মুখমেহনের প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেছেন চেতন। যদিও সেটা আর সৌজন্যের খাতিরে টুইট করে সবাইকে জানাননি। ভাবছেন তো, কী বক্তব্য তাঁর?
“আমরা যদি জনতার মুখের মধ্যে দেশপ্রেম ঘষে দিই, তাহলে দেশের প্রতি স্বতস্ফূর্ত ভালবাসাটা একদিন গায়েব হয়ে যাবে! তাই আমাদের নিজেদের মতো করেই দেশকে ভালবাসতে দেওয়া হোক”, আর্জি লেখকের।
আপনার কী মনে হয়? ঠিক বলছেন তিনি?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.