ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গায়ের রং কিংবা অর্থের আধিক্যে মনুষ্যত্বের বিচার হয় না। কাজেই তার প্রমাণ মেলে। যেমন মিলল চেন্নাইয়ের এই মহিলার কার্যকলাপে। লকডাউনের আবহেও যাঁরা ধর্ম কিংবা রাজনীতির খেলায় ব্যস্ত, এই মহিলাই তাঁদের চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন মনুষ্যত্বই আসল ধর্ম। পোষ্য সারমেয়দের খাওয়াতে দিনের পর দিন একবেলা খেয়েই জীবনযাপন করে চলেছেন তিনি।
সংকটের দিনেই মানবিকতার আসল পরিচয় পাওয়া যায়। একটা ছোট্ট সিদ্ধান্তও একজনের জন্য পুনর্জন্মের সমান হতে পারে। পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়ার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার। কখনও হয়তো হাজার চাকচিক্যের ভিড়ে সেই মানবিকতার কাহিনি ধামাচাপা পড়ে যায়। কিন্তু উপকৃত সর্বদা কৃতজ্ঞ থাকে। ঠিক যেমন থাকবে এই ১৩টি সারমেয়। যাদের মুখে রোজ খাবার তুলে দিচ্ছেন এ মীনা। চেন্নাইয়ের মায়লাপুর এলাকায় ১৩টি পোষ্যকে নিয়ে বাস। পেটের তাগিদে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে রান্না করেন। সেই অর্থেই কোনওক্রমে দিনগুজরান হয়। লকডাউনে পরিস্থিতি আরও করুন। নুন আনতে পান্তা ফুরনোর জোগাড়। কিন্তু তাই বলে তো আর পোষ্যদের অভুক্ত রাখা যায় না। তারা যাতে খাওয়া-দাওয়া করে স্বাভাবিকভাবেই দিন কাটায়, তার জন্য সদা সচেতন মীনাদেবী। আর তাই নিজে একবেলা খেয়েই বাকি খাবার তুলে দেন সারমেয়দের মুখে।
তাঁর এই ভালবাসার কাহিনি সামনে এসেছে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতেই। তাঁর মানবিক রূপ মন ছুঁয়েছে নেটিজেনদের। তবে মীনাদেবী প্রচারের আলো পেতে এসব করেন না। করেন নিজের সন্তানতুল্য সারমেয়দের সুস্থ রাখতে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “যেখানে কাজ করি, সেখান থেকে অগ্রিম বেতন চাইতে ভীষণ ইতস্তত বোধ করছিলাম। কিন্তু সৌভাগ্যবশত দুটো বাড়ি থেকে অগ্রিম পাই। ওঁরা জানেন আমার পরিবারে ১৩টা সারমেয় রয়েছে।”
তবে শুধু নিজের পোষ্যদেরই নয়, পথকুকুরদের প্রতিও একইরকম টান অনুভব করেন তিনি। চেষ্টা করেন যাতে এই লকডাউনে তাদেরও খাবারের অভাব না হয়। বলছিলেন, আগে অনেককেই খেতে দিতেন। এখন যারা বাড়ির সামনে আসে, তাদের দেন। কবে লকডাউন উঠবে। কবে নিজে ও সারমেয়রা স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে, এখন তারই অপেক্ষায় মীনাদেবী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.