সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাবালিকাকে কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ খাইয়ে নাগাতার গণধর্ষণ। এই অভিযোগে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোমহর্ষক ঘটনাটি চেন্নাইয়ের এক আবাসন চত্বরের। অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই ওই আবাসনের লিফট অপারেটর, প্লাম্বার, মালি, ইলেকট্রিকের মিস্ত্রি ও নিরাপত্তারক্ষী-সহ অন্যান্য কর্মী। অভিযোগ, শুধু ধর্ষণের পাশাপাশি ভিডিও করত অভিযুক্তরা। সেই ভিডিও দেখিয়েই নির্যাতিতাকে ব্ল্যাকমেল করা চলছিল। এহেন নির্যাতনের খবর প্রকাশ্যে এলেই সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এই ভয় দেখিয়ে একমাস ধরে নাবালিকাকে ধর্ষণ করছিল অভিযুক্তরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই আবাসন চত্বরে প্রায় ৩০০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। তারই একটিতে বাবা মায়ের সঙ্গে থাকে নির্যাতিতা। কয়েকদিন আগে দিল্লি থেকে এক দিদি তাদের বাড়িতে আসে। কথায় কথায় এই অত্যাচারের ঘটনা তাকে বলে দেয় ওই নাবালিকা। সেই দিদিই অভিভাবকদের বিষয়টি জানালে স্থানীয় থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়। নির্যাতিতাকে হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর বাবা-মা। পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন লাগাতার গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ওই নাবালিকা। তাকে কড়া ডোজের ওষুধ ও পানীয় খাইয়েই চলেছে ধর্ষণ।
18 men held for allegedly sexually harassing an 11-year-old girl for over a period of 7 months in Chennai. The accused involve security men, lift operator & water suppliers in the apartment where the minor girl stays. Police investigation underway pic.twitter.com/DcJIUhwDCG
— ANI (@ANI) July 17, 2018
এরপর পুলিশের জেরায় নির্যাতিতা জানিয়েছে, মাসখানেক আগে আবাসনের লিফট অপারেটর প্রথম তার সঙ্গে অসভ্যতা করে। অভিযুক্তের নাম রবি কুমার (৬৬)। এই ঘটনার তিনদিন বাদে আরও দুজনকে নিয়ে এসে নাবালিকার উপরে নারকীয় নির্যাতন চালায় অভিযুক্ত। তাদের একজন ধর্ষণের ভিডিও করে। পরে নির্যাতিতাকে সেই ভিডিও দেখিয়ে চলে লাগাতার ধর্ষণ। একে একে অভিযুক্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। স্কুলভ্যান নাবালিকাকে আবাসনের সামনে নামিয়ে দিয়ে গেলেই রবি তাকে পাকড়াও করত। এরপর কমপ্লেক্সের ছাদে, ফাঁকা জিমে, কখনও বেসমেন্টের ছাদে যেখানে যখন ফাঁকা পেত সেখানেই নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হত। মূলত দুপুরের এমন সময় তারা নির্যাতিতার উপরে অত্যাচার করত, যখন গোটা কমপ্লেক্স চত্বর মোটামুটি ফাঁকাই থাকত। তাই একমাস টানা অপরাধ করেও কারওর চোখে পড়েনি। তাছাড়া ১৮ জন অভিযুক্ত পালা করে পাহারাও দিত। নাবালিকার জবানবন্দির ভিত্তিতে একে একে ১৮ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত আরও চার অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। কমপ্লেক্সের ফাঁকা বেসমেন্ট থেকে পানীয়র বোতল, সিরিঞ্জ ও কন্ডোম উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেগুলি ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মূলত একটি সংস্থার অধীনে থাকা চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তাকর্মী। তাদের নাম মুরুগেশ (৫৪), পালানি (৪০), অভিষেক (২৩), প্রকাশ (৫৮) সুগুমারান (৬০) উমাপথি (৪২), এছাড়া লিফট অপারেটর রবি কুমার (৬০), দিনদয়ালন (৫০), শ্রীনিবাসন (৪৫), বাবু (৩৬), প্ল্যাম্বার জয়গণেশ (২৩), রাজা (৩২), সূর্য (২৩),সুরেশ (৩২), ইলেকট্রিকের মিস্ত্রি জয়রমণ (২৬) ঝাড়ুদার রাজশেখর (৪০), মালি গুণশেখর (৫৫)। মহিলা আদালতে নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দির পর ধৃতদের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.