ধ্রবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: চন্দ্রপৃষ্ঠে খোদাই বাঙালি বিজ্ঞানী শিশিরকুমার মিত্রর নাম। চন্দ্রযান ২’এর পাঠানো চাঁদের নতুন ছবি খুঁটিয়ে দেখলেই তা বোঝা যাচ্ছে। আর তা আবিষ্কার করে উচ্ছ্বসিত ইসরো। সোমবার সন্ধেয় ইসরোর তরফে টুইট করে দুটি ছবি প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, অমসৃণ চন্দ্রপৃষ্ঠের পিঠের সাদাকালো ছবি। শক্তিশালী টেরেন ম্যাপিং ক্যামেরার সাহায্যে অনেক কিছুই স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে।ইসরো সূত্রে খবর, ছবিগুলি তোলা হয়েছিল গত ২৩ তারিখ।
চন্দ্রযান ২’এর পাঠানো ছবিতে কয়েকটি ক্রেটার দেখা যাচ্ছে। সেখানে একেকটি নাম খোদাই করা। কোনওটার নাম জ্যাকসন, কোনওটা কোরোলেভ। তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ পর্যবেক্ষণ, একটি ক্রেটারের গায়ে লেখা ‘মিত্র’। আর তা বিশ্লেষণ করতে গিয়েই ইসরোর বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, নামটি বাঙালি পদার্থবিজ্ঞানী পদ্মভূষণ প্রাপ্ত অধ্যাপক শিশিরকুমার মিত্রর। তাঁর নামেই চন্দ্রপৃষ্ঠের ওই অংশের নামকরণ করা হয়েছে। যা এতদিন পর প্রকাশ্যে আসায় ব্যাপক উচ্ছ্বাস বিজ্ঞানী মহলে। সেইসঙ্গে একেবারে খাঁটি দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি নতুন চন্দ্রযানটির পারফরম্যান্সেও মুগ্ধ তাঁরা।
#ISRO
— ISRO (@isro) August 26, 2019
Lunar surface imaged by Terrain Mapping Camera-2(TMC-2) of #Chandrayaan2 on August 23 at an altitude of about 4375 km showing craters such as Jackson, Mach, Korolev and Mitra (In the name of Prof. Sisir Kumar Mitra)
For more images please visit https://t.co/ElNS4qIBvh pic.twitter.com/T31bFh102v
এর আগে ২২ তারিখ চাঁদের প্রথম ছবি পাঠিয়েছিল চন্দ্রযান ২। সেখানে অ্যাপোলো ক্রেটার এবং সমতল অংশ মেয়ার অরিয়েন্টাল বেসিন দেখা গিয়েছিল।
চাঁদের মাটিতে নামতে চন্দ্রযানের হাতে আর বেশিদিন নেই। সমস্ত অঙ্ক ঠিক থাকলে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর গভীর রাতেই চন্দ্রপৃষ্ঠে লাফিয়ে পড়বে ল্যান্ডার বিক্রম। তারপর সেখানেই চলবে পরীক্ষানিরীক্ষা। মূলত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে জলের সন্ধান চালানোর মতো মহা গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে গিয়েছে চন্দ্রযান ২। এতে রয়েছে ইমেজিং আইআর স্পেকট্রোমিটার ও ডুয়েল ফ্রিকোয়েন্সি সিন্থেটিক অ্যাপারচার রেডার
নামের দু’টি যন্ত্র। প্রথম যন্ত্রটির সাহায্যে একবছর ধরে চন্দ্রপৃষ্ঠে জলের সন্ধান চালানো হবে। সেই সঙ্গে চাঁদের খনিজ ভাণ্ডারেরও সন্ধান চালাবে এই যন্ত্র। দ্বিতীয় যন্ত্রটি বা ডুয়েল ফ্রিকোয়েন্সি সিন্থেটিক অ্যাপারচার রেডারটি চাঁদের মেরু অঞ্চল ও চন্দ্রপৃষ্ঠের ঠিক নিচের স্তরে জল রয়েছে কি না, তা খুঁজবে। ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০০৮ সালে চন্দ্রযান ১-এ অরবিটার চাঁদের অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকাতেই জলের
অস্তিত্ব পেয়েছিল। চন্দ্রযান ২’এ চাঁদের বায়ুমণ্ডল-সহ খনিজ, মাটি, তাপমাত্রা, মাটির উপাদান প্রভৃতি একাধিক বিষয়ে গবেষণা করার বিভিন্ন যন্ত্র থাকছে।
আরেকদিকে, চন্দ্রযান ২ অর্থাৎ দেশের মহাকাশ গবেষণায় এত বড় একটি উদ্যোগ সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে অবহিত করতে অনলাইন কুইজের আয়োজন করেছে ইসরো কর্তৃপক্ষ। স্কুলপডুয়াদের নিয়ে হবে এই কুইজ প্রতিযোগিতা। অনলাইনে কুইজের উত্তর দিয়ে যে ছাত্র বা ছাত্রী প্রথম হবে, সে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইসরোর কন্ট্রোল রুমে বসে চাঁদের পিঠে চন্দ্রযান ২’ এর অবতরণ লাইভ দেখার সুযোগ পাবে। এনিয়ে ইতিমধ্যে
কেন্দ্রীয় বোর্ডের অধীনস্ত স্কুলগুলিতে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.