সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাসপাতালে রোগীমৃত্যুর জেরে ভাঙচুর, চিকিৎসক নিগ্রহ এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। তিনদিন আগেই অসমের চা বাগানে ৭৩ বছর বয়সি এক চিকিৎসক দেবেন দত্তকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে শ্রমিকরা। এই প্রবণতায় রাশ টানতে এবার সক্রিয় হল কেন্দ্র। স্বাস্থ্যমন্ত্রক একটি খসড়া বিল তৈরি করেছে। তাতে চিকিৎসক নিগ্রহে দশ বছর পর্যন্ত জেলের সুপারিশ করা হয়েছে। না হলে জরিমানা দিতে হবে দশ লক্ষ টাকা। বিলটি কীভাবে আরও নিখুঁত করা যায়, সে সম্পর্কে মানুষের মতামত জানতে চায় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। তারপরই সেটি চূড়ান্ত রূপ পাবে।
কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসক নিগ্রহ এখন কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলির মাথাব্যথার কারণ। গত জুন মাসে কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালে এক বৃদ্ধ রোগীর মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের হাতে গণপিটুনির শিকার হয়েছিলেন ডাক্তার পরিবহ মুখোপাধ্যায়। মাথায় গুরুতর চোট লেগে প্রায় মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাঁকে। দীর্ঘ চিকিৎসার পর অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেও ফের কবে তিনি স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফিরতে পারবেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই গিয়েছে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলকাতা, বাংলা-সহ সারা দেশজুড়ে এই ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করে কর্মবিরতি পালন করেন ডাক্তাররা।
চিকিৎসক নিগ্রহে অভিযুক্তদের শাস্তি দিতে আইন তৈরি করার কথা বলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। অবশ্য তার আগে থেকেই এ বিষয়ে বিল আনার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রক খসড়া হেলথ কেয়ার সার্ভিস পারসোনেল অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল এসট্যাব্লিশমেন্ট (হিংসা ও সম্পদের ক্ষতি প্রতিরোধ), ২০১৯ প্রকাশ করেছে। চিকিৎসকদের যাতে জনরোষের জেরে শারীরিক ক্ষতি বা জীবনহানির মতো পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, তার জন্য আইন তৈরি করে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করতে চাইছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। শীঘ্রই বিল পাস করিয়ে শাস্তি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।
সরকারি হাসপাতালে রোগীর ভিড় সামলাতে গিয়ে গাফিলতির অভিযোগে জনরোষের শিকার হতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। ৩০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে সাধারণ মানুষের আপত্তি ও পরামর্শ নিয়ে বিলটি চূড়ান্ত করা হবে। বিলের খসড়ায় বলা হয়েছে, চিকিৎসক নিগ্রহের অপরাধ যাতে জামিন অযোগ্য হয় তাও দেখতে হবে। একইসঙ্গে অভিযুক্তকে আক্রান্ত চিকিৎসক বা চিকিৎসা কর্মীর চিকিৎসার খরচ দিতে হবে। হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভাঙচুর হলে তার ক্ষয়ক্ষতিও দিতে হবে। বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন এই ধরনের কঠোর আইনের দাবিতে সরব ছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.