সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতে প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সারা দেশ জুড়েই জারি অঘোষিত বনধের পরিস্থিতি। এই পরিস্থিতিতে ধীরে ধীরে বন্ধ হচ্ছে দোকান-পাট।আর্থিক মন্দার পাশাপাশি কালোবাজারি এবং রেশনে টান পড়ার আশঙ্কাও করছেন সাধারণ মানুষ। ফলে চাল, ডাল, গম,ও শুকনো খাবার বাড়িতে মজুত করে রাখতে ব্যস্ত হচ্ছেন সকলেই। আতঙ্কে ত্রস্ত হচ্ছে দৈনন্দিনের নগরজীবন।
করোনার মারণ কামড় থেকে রাজ্যবাসীকে বাঁচাতে নিত্যদিন সচেতনতার বার্তা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাকি রাজ্যগুলির তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি ঢের ভাল হলেও আত্মতুষ্টিতে সন্তুষ্ট থাকতে চান না মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান,”করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে কড়া পদক্ষেপ নেবেন তিনি। গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হলে নির্দিষ্ট এলাকা বা পাড়াকে বাকিদের বিচ্ছিন্ন ঘোষণা করতে তিনি দ্বিধা করবেন না।” ফলে সমস্যা তৈরির আগেই তা সমাধানের সমস্ত উপকরণ মজুত রাখারও পরামর্শ দেন তিনি। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে তাই মধ্যবিত্ত ব্যস্ত গেরস্থালি সামলাতে।এর মধ্যেই বড় ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান৷ তিনি জানিয়েছেন,”এবার থেকে রেশনে একসঙ্গে ৬ মাসের খাদ্যশস্য তোলা যাবে৷ দেশের ৭৫ কোটি মানুষ গণবণ্টন সিস্টেমের আওতায় পড়েন। এবার থেকে চাইলে তাঁরা ৬ মাসের খাদ্যশস্য একসঙ্গে তুলে নিতে পারবেন। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারগুলির কাছেও নির্দেশ পাঠানো হচ্ছে।” এতদিন পর্যন্ত দু’মাসের খাদ্যশস্য একবারে মজুত করার নিয়ম ছিল। তবে করোনা সতর্কতায় সেই মেয়াদ বাড়িয়ে ছ’মাস করা হয়েছে। বুধবার এই ঘোষণা করেছেন রামবিলাস পাসওয়ান। পাঞ্জাব সরকার আগেই এই নিয়ম চালু করেছিল। এবার সারা দেশেই চালু হবে নয়া নিয়ম। রামবিলাস পাসওয়ানের কথায়,”সরকারের গুদামে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। তাই সমস্ত রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে বলা হয়েছে গরিব মানুষ যেন রেশনে একবারে ৬ মাসের খাদ্যশস্য মজুত করতে পারেন সেদিকে নজর রাখতে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন যে আপাতত সরকারের গুদামে ৪৩৫ লক্ষ টন উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। যার মধ্যে ২৭২.১৯ লক্ষ টন চাল এবং ১৬২.৭৯ লক্ষ গম রয়েছে।পাসওয়ানের কথায়, আসন্ন এপ্রিল মাসের ক্ষেত্রে গণবন্টন ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজন ১৩৫ লক্ষ টন চাল আর ৭৪.২ লক্ষ টন গম।”
তবে সরকারের এই ঘোষণার পরেই আচমকা রেশন দোকানে অতিরিক্ত ভিড় জমতে পারে আজ থেকে। মানুষের মধ্যে যাতে অযথা আতঙ্ক তৈরি না হয় এবং পরিস্থিতি যাতে সুষ্ঠু ভাবে সামাল দেওয়া সম্ভব হয় সেজন্য বিভিন্ন রাজ্যকে ইতিমধ্যেই নির্দেশিকা পাঠিয়েছে কেন্দ্র। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন অনুসারে দেশের প্রায় ৫০,০০০ রেশন দোকানে ৩ টাকা কিলো চাল, ২ টাকা কিলো গম এবং ১টাকা কিলো হিসেবে দানাশস্য দেওয়া হয়। এই গোটা প্রকল্পের বার্ষিক খরচ প্রায় ১.৪ লক্ষ কোটি টাকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.