ফাইল চিত্র
বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: শুধুমাত্র সামাজিক মাধ্যমে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেই হয় না। আইনি পদ্ধতিতে তা প্রমাণসাপেক্ষ। এই যুক্তি দিয়ে লোকসভায় সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাংলার শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের উপর দেশের সর্বোচ্চ আদালত যে স্থগিতাদেশ দিয়েছে, সেই তথ্য তুলে লোকসভায় মুখর হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার লোকসভায় সরকারি চাকরির পরীক্ষা (অনিয়ম প্রতিরোধ) বিল, ২০২৪ পাশ হয়ে গিয়েছে। বিলের উপর আলোচনায় বিজেপির তরফে বাংলার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গ তোলা হয়। আলোচনায় অংশগ্রহণ করে নাম না করেই এই সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতির নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন কল্যাণ। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিচারপতিকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি।
এদিন কল্যাণ বলেছেন, “বাংলার শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির কথা বলা হচ্ছে। কিছু অভিযোগ আছে। কিন্তু সেই মামলায় কী হবে তা ভবিষ্যৎ বলবে। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু অসফল ব্যক্তি সফল ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এমনকী তাঁরা চার, পাঁচ বছর পরেও আসছেন। এটাই হল আসল চিত্র। তাতে কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের এক বিচারকের রায়ে ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি চলে যায় এবং তিনি নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার নির্দেশ দেন। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে গেলে পুরো নির্দেশের উপরেই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। অপর একটি মামলায় একই বিজ্ঞ বিচারকের নির্দেশে ১৫ হাজার শিক্ষক ও কর্মীর চাকরি চলে যায়। এ ক্ষেত্রেও পুরো নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালত। কারণ সেখানে আইনের নীতি মানা হয়নি। এই সব কিছুই হয়েছে মিডিয়া ট্রায়ালের জন্য। কোনও প্রমাণ নেই, কোনও কিছুই প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শুধুমাত্র মুখে দুর্নীতি, দুর্নীতি করে চিৎকার করলেই হবে না। আদালতে তা প্রমাণ করতে হবে।”
প্রসঙ্গত, বিজেপির তরফে বাংলার শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির কথা বলা হলেও কেন্দ্র সরকারের এই বিল নিয়ে আসার মূল কারণ রাজস্থানে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা, হরিয়ানায় গ্রুপ-ডি পদের জন্য কমন এলিজিবিলিটি টেস্ট (সিইটি), গুজরাটে জুনিয়র ক্লার্কদের নিয়োগ পরীক্ষা এবং বিহারে কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের জেরে পরীক্ষা বাতিল হয়ে যাওয়া। যাতে বহু পরীক্ষার্থী বিপাকে পড়েন। তার পরই এই আইনটি নিয়ে এসেছে কেন্দ্র। সরকারি পরীক্ষা পদ্ধতিতে অধিকতর স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা আনার লক্ষ্যে এই বিল বলেই দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং। বিলে কেউ পরীক্ষায় অনিয়ম করলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে বলে বিধান রয়েছে। এই ঘোষণায় অনেক শিক্ষার্থী ‘প্রতারণা’ নিয়ে বিভ্রান্ত হয়েছিল। জিতেন্দ্রর ব্যাখ্যা, যে সমস্ত পরীক্ষার্থী কোনও রকম অসদুপায় অবলম্বন না করেই পরীক্ষা দেন তাঁদের চিন্তার কারণ নেই। যাঁরা প্রশ্ন ফাঁস, টুকলির মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকেন, তাঁরা কঠোর শাস্তির মুখে পড়বেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.