সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্থানীয় কিছু মুসলিম নাপিত তাঁদের চুল ও দাড়ি কাটতে চাইছেন না। এই অভিযোগ জানিয়ে পুলিশ ও জেলাশাসকের দ্বারস্থ হলেন দলিত সম্প্রদায়ের মানুষরা। অদ্ভুত এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ জেলার ভোজপুর থানার অন্তর্গত পিপালসানা গ্রামে। এর মীমাংসা করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় পুলিশ আধিকারিকরা। যদিও অভিযোগ পাওয়ার পরে একটি তদন্তকারী দল তৈরি করেছেন মোরাদাবাদের পুলিশ সুপার অমিত পাঠক। তারা রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানা গিয়েছে। এদিকে কয়েকজন মুসলিম নাপিতদের ডেকে এবিষয়ে জেরা করার জেরে সমস্ত দোকান বন্ধ করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন অন্য নাপিতরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পিপালসানা গ্রামে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যাই বেশি। তবে কিছু দলিত সম্প্রদায়ের মানুষও বাস করেন সেখানে। তাঁদের অভিযোগ, নিজেদের সম্প্রদায়ের মানুষের চুল ও দাড়ি কাটলেও তাঁদের দোকানে ঢুকতে দেন না নাপিতরা। এই সম্প্রদায়ের বয়স্ক মানুষরা বলেন, জাতপাত নিয়ে বৈষম্যের জেরে দীর্ঘদিন আমাদের ভুগতে হয়েছে। কিন্তু, আমরা চাই আগামী প্রজন্মকে যেন এই সমস্যার মুখোমুখি হতে না হয়। জাতপাতের এই লড়াই যেন শেষ হয়।
কল্যাণ নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, “ওই মুসলিম নাপিতরা আমাদের ঘৃণা করে। তাই আমরা গেলেই ওরা দোকান বন্ধ করে দেয়। এর ফলে আমাদের সন্তানদের বিয়েও হয় না। যেহুতু নিজেদের গ্রামেই আমরা চুল কাটাতে পারি না তাই এলাকার মানুষ আমাদের নিয়ে ব্যঙ্গ করে। আমাদের সন্তানদের বিয়েও হয় না কেউ মেয়ে দিতে চায় না বলে। আজকের দিনে সবই যখন বদলে যাচ্ছে তখন এই ধরনের মানসিকতা আমাদের পিছনদিকেই টেনে নিয়ে যাচ্ছে।”
যদিও ওই দলিতরা তাঁদের কাছে কখনও চুল বা দাড়ি কাটাতে আসেননি বলে উল্লেখ করেন নৌশাদ নামে মুসলিম নাপিত। তিনি বলেন, “দলিতরা কখনও আমাদের দোকানে আসে না। চুল বা দাড়ি কাটাতে ওরা সবাই ভোজপুরে একজন দলিতের দোকানেই যায়। কিন্তু, এখন ওরা আমাদের এখানে চুল কাটাতে চাইছে। ওদের চুল কাটার পর তোয়ালে নোংরা হয়ে যাবে। ফলে কোনও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ আর আমাদের দোকানে আসবে না। তাই দলিতরা যদি এখানে চুল কাটাতে চায় তাহলে নিজেদের সম্প্রদায়ের কাউকে দিয়ে দোকান চালু করুক।”
আলি আহমেদ বলে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “মুসলিম অধ্যুষিত এই গ্রামে ৯৫ শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। অল্পকিছু সংখ্যক দলিত আছে। এখন ওরা আমাদের নাপিতদের দিয়ে চুল-দাড়ি কাটাতে চাইছে। আগামীকাল এই গ্রামে থাকা বিয়ে বাড়িগুলি বুকিং করাবে। আসলে এইভাবে কিছু মানুষ এখানে অশান্তি ছড়াতে চাইছে। দীর্ঘদিন ধরেই এই গ্রামে শান্তি বজায় রয়েছে। তা কিছু মানুষের সহ্য হচ্ছে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.