Advertisement
Advertisement

Breaking News

থমথমে তামিলনাড়ুতে প্রার্থনা শুধু আম্মার জন্য

আম্মার শরীর নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা প্রকাশ্যে বলা চলবে না!

Cannot ask about Amma's health in public places of Tamilnadu
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 19, 2016 2:31 pm
  • Updated:October 19, 2016 2:31 pm  

শঙ্কর ভট্টাচার্য: কথা বোলো না, কেউ শব্দ কোরো না! না, একটি বিষয় নিয়ে কেউ কোনও আলোচনা করতে পারবে না৷ অলিখিত এই ফতোয়া জারি হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে হাসপাতালে৷ কিন্তু তা নিয়ে অফিস, খেলার মাঠ, বাস বা সৈকতে কোথাও কেউ কথা বলতে পারবেন না৷ সারা রাজ্যজুড়ে ঘুরছে আম্মার ‘ছেলেরা’৷ পুলিশে খবর চলে যাবে৷ সোজা জেল৷ আর ফেসবুক বা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও কিছু পোস্ট করা তো বহু আগেই নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে৷ সব মিলিয়ে গ্রেফতারের সংখ্যা এখন ২২ জন ছাড়িয়েছে৷

এর বিরুদ্ধেই আসরে নেমে পড়েছে বিরোধীরা৷ কিন্তু কেন এই ‘ভয়’? আসলে পুলিশ-প্রশাসনের  ভয় আম্মা ভক্তদের নিয়ে৷ তাঁরা যে কোনও সময়ে আত্মহত্যা করে ফেলতে পারেন তেমন কোনও ‘খারাপ খবর’ পেলে৷ গত বছর জয়ললিতা জেলে যেতেই আত্মঘাতী হয়েছিলেন কম করে আড়াইশো জন সমর্থক৷ আর যদি এখন তাঁর ‘তেমন কিছু’ হয়ে যায়, তবে অবস্থাটা যে কোথায় দাঁড়াবে, তা ভাবতেই শিউরে উঠছেন প্রশাসনিক কর্তারা৷ তাই এই ‘অতিসক্রিয়তা’৷ এই অবস্থায় কিন্তু সংবাদমাধ্যমও মেপে পা ফেলছে৷ সরকারি বুলেটিন বা হাসপাতালের প্রেস রিলিজের বাইরে কিছু ছাপা হচ্ছে না৷ ফলে জল্পনা-কল্পনা আরও বাড়ছে৷ হাওয়া লাগছে গুজবে৷

Advertisement

তবে সব থেকে চাঞ্চল্য ফেলেছে কোয়েম্বাটোরের একটি ব্যাঙ্কের ঘটনা৷ কানাড়া ব্যাঙ্কের এক কর্মী এবং তাঁর পরিচিত এক গ্রাহক জয়ললিতার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করছিলেন৷ তখনই ব্যাঙ্কের ওই শাখায় পুনিতা দেবী নামে এক গ্রাহক পাসবই আপডেট করতে এসেছিলেন৷ সঙ্গে সঙ্গে তিনি প্রতিবাদ করেন৷ শুরু হয় বচসা৷ পুনিতা দেবী থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন৷ গ্রেফতার করা হয় ওই ব্যাঙ্কের করণিক এল রমেশ এবং গ্রাহক আর সুরেশকে৷ আদালতের নির্দেশে তাঁদের বিচারবিভাগীয় হাজতে রাখা হয়েছে৷ এই ঘটনার পর তাঁদের পাশে দাঁড়াতেও ‘ভয়’ পাচ্ছে কর্মাচারী সংগঠনগুলি৷

একই অবস্থা রাজনৈতিক দলগুলিরও৷ সরাসরি আম্মার স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলতে সাহস পাচ্ছেন না কোনও দলের কোনও নেতাই৷ কেবল তবে ডিএমকে-সহ অন্য দলগুলি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্যের হাল জানতে চাইছেন রাজ্য সরকারের কাছে৷ তবে এই গ্রেফতারির বিষয় নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর৷ গ্রেফতারির বিরুদ্ধে ডিএমকে সরাসরি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে এডিএমকে সরকারের বিরুদ্ধে৷ ডিএমকের পক্ষ থেকে এম কে স্ট্যালিন বলছেন, বেছে বেছে তাঁদের দলের এবং অন্য বিরোধী নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেই মামলা করছে পুলিশ৷ এই অবস্থা চলতে পারে না৷ তবে এঅইএডিএমকের মুখপাত্র সি আর সরস্বতী বলছেন, পুলিশ সঠিক কাজ করছে৷ কাউকে অন্যায়ভাবে ধরা হয়নি৷

আম্মার ভক্তদের অবশ্য এই সব তাত্ত্বিক কথায় মন নেই৷ তাঁরা এখন দলে দলে ভিড় জমাচ্ছেন চেন্নাইয়ের সেই বেসরকারি হাসপাতালের সামনে৷ যাঁরা যেতে পারছেন না, তাঁরা স্থানীয় মন্দিরে গিয়ে হত্যে দিচ্ছেন৷ চলছে পুজোপাঠ৷ চেন্নাই, মাদুরাই, তিরুচিরাপল্লি থেকে কন্যাকুমারী, সর্বত্রই একই ছবি৷ কিন্তু আম্মার শরীর নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা প্রকাশ্যে বলা চলবে না৷ সাবধান!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement