সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ত্রিপুরার পর এবার রাজ্যের শাসকদলের নজরে বামশাসিত কেরল (Kerala)। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে জাতীয় স্তরে বিরোধী জোটের মূল নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠার রাস্তা তৈরি করছে তৃণমূলে। আর তারই অঙ্গ হিসেবে এবার কেরলেও শক্তিবৃদ্ধির চেষ্টা। দাক্ষিণাত্যের এই রাজ্য অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দলকে কাছেই টেনে নিয়েছে। তার প্রমাণ দেখা গেল এর্নাকুলামের (Ernakulam) রাস্তায়। সেখানে তৃণমূল সুপ্রিমোর ছবি দেওয়া বিশাল হোর্ডিং। ইংরাজি এবং মালয়ালি ভাষায় যা লেখা, তার বাংলা করলে দাঁড়ায় – ‘ভারত বাঁচাতে দিদিকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লি চলো।’ নিচে কেরল প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির নাম লেখা। অর্থাৎ কেরলে দলের রাজ্য কমিটিই এভাবে প্রচারে নেমেছে।
বাম বিরোধিতায় তৃণমূলের সাফল্যের সাক্ষী পশ্চিমবঙ্গ। ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে ধরাশায়ী করে রাজ্যের শাসনক্ষমতায় বসেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। দলের অন্দরেই গুঞ্জন চলে, বামফ্রন্টের মোকাবিলায় তৃণমূলের স্ট্র্যাটেজি নির্ণয় খানিকটা সহজ। কারণ, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এই শত্রু তাদের বহুদিনের চেনা। সেই সমীকরণেই এবার শক্তি বাড়িয়ে বামশাসিত কেরলের মাটিতে দাঁত ফোটাতে চাইছে বঙ্গের শাসকদল। সূত্রের খবর, বিজয়নের রাজ্যে ৫১ সদস্যের রাজ্য কমিটি তৈরি করেছে তৃণমূল (TMC)। তৈরি হয়েছে পার্টি অফিসও। সেখানে দলীয় পতাকা হাতে তুলে একে একে তৃণমূলে যোগদান করেছেন অনেকেই। আর তাঁদেরই হাত ধরে এবার শুরু হল প্রচার। কেরলেও স্লোগান উঠল – ভারত বাঁচাতে দিদিকে চাই।
চলতি সপ্তাহে ত্রিপুরা অভিযান সেরে এসেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। বিজেপি শাসিত উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে তৃণমূলের খুব কম প্রভাব নেই। অভিষেকের সফরে নানা বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও তা বেশ ভালভাবেই মোকাবিলা করে রাজনৈতিক লড়াইয়ের বার্তা দিয়ে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে ফিরেছেন অভিষেক। তার পরপরই কেরলে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সম্বলিত বড়সড় হোর্ডিং। আর এসব থেকেই স্পষ্ট, জাতীয় স্তরে আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে বাংলার শাসকদল। তাই শুধু বাংলা কিংবা প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতেই নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই শাখা বিস্তার করে শক্তিবৃদ্ধির চেষ্টা করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
এমনিতে তামিলনাডু়র (Tamil Nadu) রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর সম্পর্ক ভাল। প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার সঙ্গে তাঁর ভাল সম্পর্ক ছিল। বর্তমানে ডিএমকে-র স্ট্যালিনের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সখ্য। কেন্দ্রবিরোধী বিভিন্ন ইস্যুতে মমতার পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে স্ট্যালিনকে। তবে কেরল সে অর্থে তৃণমূলের একেবারে নতুন যুদ্ধক্ষেত্র। কিন্তু সেখানেও রাজ্য কমিটি গড়ে তৃণমূল ক্রমশ নিজেদের শক্তি জানান দিচ্ছে। আর এসবই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লি দখলের লড়াইয়ে বাড়তি অক্সিজেন জোগাচ্ছে, তা বলাই যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.