সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পারফরম্যান্সই শেষ কথা! দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় প্রথমবার রদবদলের আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। একপ্রকার সবাইকে চমকে দিয়ে নতুন মন্ত্রীদের শপথের আগে ইস্তফা দিতে হয়েছিল ১২ জন মন্ত্রীকে। সম্প্রসারণের আগে মোদি মন্ত্রিসভার মোট সদস্য ছিলেন ৫৩ জন। অর্থাৎ, এদিন একযোগে ২০ শতাংশের বেশি মন্ত্রীকে ছেঁটে ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তালিকায় রবিশংকর প্রসাদ, রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক, প্রকাশ জাভড়েকর, বাবুল সুপ্রিয়দের মতো বড় নাম থাকলেও, সবচেয়ে বড় এবং চমকপ্রদ নাম অবশ্যই স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনের (Harsh Vardhan)। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে গোটা দেশ যখন নাজেহাল, তখন দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ আলাদা তাৎপর্য তো রাখবেই।
কিন্তু কেন কোপ পড়ল হর্ষবর্ধনের উপর? সরকার বারবার দাবি করছে, দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। এমনকী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) নিজে গুজরাটে গিয়ে দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে করোনার দ্বিতীয় ঢেউও সফলভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে ভারত। টিকাকরণের গতি থেকে করোনা রোগীদের পরিষেবা। সবেতেই বুক বাজিয়ে সাফল্য দাবি করছে কেন্দ্র। প্রশ্ন হল, তাই যদি হয়, তাহলে তো স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বাহবা প্রাপ্য। কেন হঠাত তাঁকে ইস্তফা দিতে হল? আসলে বাস্তবটা হল সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণে যতই সাফল্য দাবি করুক, এই মুহূর্তে করোনা (Coronavirus) ইস্যুতে কেন্দ্র বেশ চাপে। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার শুরুর দিকে যেভাবে অক্সিজেনের অভাবে একের পর এক মানুষের প্রাণ গিয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসার অভাবে দুর্দশার যে ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লির মতো এলাকায় মৃত্যুমিছিলের যে ছবি ধরা পড়েছে, তা মোদি সরকারের জনপ্রিয়তাকে ভালমতোই ধাক্কা দিয়েছে। তাছাড়া করোনা পর্বের শুরু থেকেই সেভাবে সামনে থেকে লড়তে দেখা যায়নি হর্ষবর্ধনকে। আবার রামদেবের করোনিল এবং হোমিওপ্যাথি মন্তব্যে নিজেকে জড়িয়ে অযাচিত বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। যার ফলে সার্বিকভাবেই হর্ষবর্ধনের কাজে খুব একটা খুশি ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী। সম্ভবত সেকারণেই কোপ পড়ল হর্ষবর্ধনের উপর।
তাছাড়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার তৃতীয় ধাক্কা আসন্ন। এই পরিস্থিতিতে আরও ভালমতো প্রস্তুতি প্রয়োজন। প্রথম দুই ধাক্কার সময় হর্ষবর্ধনকে নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর নয়। সেক্ষেত্রে নতুন মন্ত্রিসভায় তরুণ এবং প্রাণোচ্ছল কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের। এর ফলে সরকারের ভাবমূর্তিও কিছুটা উজ্বল হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ৪৯ বছর বয়সি মনসুখ মাণ্ডব্য এগিয়ে আছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে।
হর্ষবর্ধনের পাশাপাশি কোপ পড়েছে পীযূষ গোয়েলের উপরও। রেলমন্ত্রক থেকে সরিয়ে তাঁকে দেওয়া হয়েছে বস্ত্র এবং ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রক। তাঁর পরিবর্তে রেলমন্ত্রী হচ্ছেন অশ্বিনি বৈষ্ণব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.