সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বুরারির একই পরিবারের ১১ সদস্য আত্মহত্যাই করেছেন। পুলিশের দাবির সপক্ষে উদ্ধার হওয়া ১১ বছর ধরে লেখে ১১টি ডায়েরির সঙ্গে একটি সিসিটিভি ফুটেজও সায় দিচ্ছে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, ভাটিয়াদের বাড়ির কাছেই চানদাওয়াত ভবনের সিসিটিভ ফুটেজে পরিবারের সদস্যদের টুল ও দড়ি নিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে।
যে সিসিটিভি ফুটেজটি প্রকাশ পেয়েছে সেখানে দেখা গিয়েছে বাড়ির ছোটো বউ সবিতা, তাঁর মেয়ে নিতু পাঁচটি টুল নিয়ে আসছেন। রাত দশটা পনেরো নাগাজ বাড়ির সবচেয়ে ছোটো দুই সদস্য ধ্রুব ও শিবম প্লাইইডের দোকান থেকে ইলেকট্রিকের দড়ি নিয়ে আসছে। এই দড়ি ও টুল বাড়ির শনি ও রবির মধ্যরাতে সদস্যদের ‘আত্মহত্যা’র কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। অন্যদিকে, জানা যাচ্ছে, ১১টি ডায়েরির মধ্যে চূড়ান্তটিতে শেষ বাক্য লেখা হয়েছে, “এক কাপ জল রেখো, যখন এর রং বদলাবে, আমি তোমাদের বাঁচাতে আসবো। সব ক্রিয়ার পর তোমরা আবার একে অপরের সঙ্গে মিলিত হবে।” ফলে কালাজাদুর যোগ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
[ দিল্লি গণ আত্মহত্যা: ১১ নম্বরেই লুকিয়ে রহস্যের চাবিকাঠি! ]
বুধবার দিল্লির জয়েন্ট পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম ব্রাঞ্চ) জানিয়েছে, ১১টি দেহেরই ময়নাতদন্ত সম্পূর্ণ হয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্টের মনে করা হচ্ছে, সবাই আত্মহত্যাই করেছে। আরও তদন্ত চলছে। পাশাপাশি, পুলিশ ‘বাবা জানেগাদি’ নামে এক তান্ত্রিকেরও খোঁজ করছে। ভাটিয়া পরিবারের অন্য সদস্য ও আত্মীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করেই এই ব্যক্তির নাম পাওয়া গিয়েছে।
এদিকে, বুরারি গণমৃতু্যর জট খুলতে পুলিশ ‘সাইকোলজিক্যাল অটোপসি’ বা ‘মানসিক ময়নাতদন্ত’-এর চিন্তাভাবনা করছে। অর্থাৎ, পুলিশ ভরসা রাখছে মনের কাটাছেঁড়ায়। ভাটিয়াদের বাড়িতে উদ্ধার হওয়া ১১টি রহস্যজনক ডায়েরি এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা তদন্তকারীদের অনুমান, ভাটিয়া পরিবার “শেয়ারড সাইকোসিস ডিসঅর্ডার” নামে এক বিরল মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ঘনিষ্ঠভাবে মানসিক যোগ থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে এমন সমস্যা দেখা যায়। ছোঁয়াচে রোগের মতো এই মনোবিকার আক্রান্ত মানুষ থেকে তাঁর ঘনিষ্ঠদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্তদের মনে-মনে ছড়িয়ে পড়ে এই রোগ। সম্ভবত, এতেই আক্রান্ত ছিলেন ভাটিয়া পরিবারের ওই ১১ সদস্য। তদন্তে আপাতত এই অনুমানে পৌঁছেছে পুলিশ।
[ ধস্তাধস্তির চিহ্ন মিলল না ময়নাতদন্তে, কালাজাদুই প্রাণ কাড়ল ১১ দিল্লিবাসীর! ]
কিন্তু ভাটিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা তা মানতে নারাজ। পরিবারের বাকি সদস্যেরা বারবারই এটাকে গণ আত্মহত্যা না বলে খুন বলছেন। কিছু ক্ষেত্রে খটকা লাগলেও ময়নাতদন্তে ওই ১১ জনের কারও দেহে জোরজবরদস্তির প্রমাণ মেলেনি। তা থেকেই আত্মহত্যা তত্ত্বে গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ। পরিবারের অন্যান্য সদস্যেরা কিছু লুকোচ্ছেন কি না, তা নিশ্চিত করতেই সদস্যদের সাইকোলজিক্যাল অটোপসি করতে চাইছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.