সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “পাকিস্তানকে এমন সবক শেখাব যে, তারা আগামী ১০০ বছরেও ভুলবে না৷ ওদের বুঝিয়ে দেব, বিএসএফ-এর নারীশক্তি কাকে বলে!,” এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে থামলেন জম্মুর বর্ডার আউটপোস্টে কর্তব্যরত বিএসএফ-এর মহিলা কনস্টেবল রবিন্দর কৌর৷ তাঁর পাশেই ৫.৫৬ এমএম ইনস্যাস রাইফেল হাতে দাঁড়িয়ে অনুবালা৷ রবিন্দরের কথা শেষ হতেই দু’জনে কাঁধে আগ্নেয়াস্ত্র তুলে নিয়ে হাঁটা লাগলেন কাঁটাতার বরাবর৷ চারদিকে অতন্দ্র, তীক্ষ্ণ নজর! কোনও ফাঁক-ফোকর দিয়ে পাকিস্তানিরা যেন এ দেশে না ঢুকে পড়ে৷
বয়সে নবীন হলে কী হবে, প্রয়োজনে চোখের পলক ফেলার আগেই ‘মোর্চা’ তৈরি করে ফেলতে পারেন বিএসএফ-এর এই তরুণী কনস্টেবলরা৷ বয়স দেখে এদের বিচার করলে ভুল করবে শত্রুরা৷ কারণ, দরকার পড়লে পাকিস্তানি রেঞ্জার্সকে লক্ষ্য করে মিডিয়াম মেশিন গানের ম্যাগাজিন খালি করে দিতে পারেন এঁরা৷ ৫১ এমএম মর্টার ছুঁড়তেও এঁরা ওস্তাদ৷
জম্মুতে ১৯২ কিলোমিটার দীর্ঘ আন্তর্জাতিক সীমানা বরাবর রবিন্দর-অনুবালার মতোই প্রায় ৯০ জন বিএসএফ-এর মহিলা কনস্টেবল রয়েছেন৷ রবিন্দর বলছেন, “আমরাই দেশের নতুন নারীশক্তি৷” তাঁর স্বামী কর্মসূত্রে বিদেশে থাকেন৷ আর রবিন্দর তাঁর মহিলা সহকর্মীদের নিয়ে দেশের সীমান্ত পাহারা দেন৷ বিনা প্ররোচনায় পাকিস্তানের গুলিবর্ষণে যেদিন ভারতের সহ্যের বাঁধ ভেঙে যাবে, সেদিন ভারতও উপযুক্ত জবাব দেবে বলে হুঙ্কার ছেড়ে রাইফেলধারী রবিন্দর বলেন, “আমরা যেদিন জবাব দেব, সেদিন এমন জবাব দেব যে ওরা কোনওদিন ভুলবে না৷”
(‘শ্বাসরোধ’ করে পাকিস্তানকে খুন করতে চায় ভারত! দাবি রিপোর্টে)
বিএসএফ এই মহিলা বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যেরই বয়স ২৩ থেকে ৩০-এর কোঠায়৷ এদের মধ্যে কেউ তাঁদের পরিবার নিয়ে ব্যাটালিয়ন হেড কোয়ার্টারে থাকেন, কেউ আবার তাঁদের স্বামী-সন্তানকে ছেড়ে সীমান্তে পাহারা দেন৷ পাক হামলার জবাব দেন, আহত গ্রামবাসীদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যান৷ এরা কেউই ঝোঁকের মাথায় সেনাবাহিনীতে যোগ দেননি৷ অনুবালা বলছেন, “বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলেই সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছি৷ পাঠানকোটে আমার শ্বশুরবাড়ি৷ আমার শ্বশুর-শাশুড়ি বলেন, বৌমা আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে৷” প্রায় ৮ বছর ভারতীয় ফৌজে কর্মরত অনুবালা৷ একা তিনি নন, তাঁর মতো আরও অনেকে আখনুর, আরনিয়া, আর এস পুরার মতো অতি সংবেদনশীল সেক্টরে দিনরাত পাহারা দেন৷ পাক শেলিংয়ের আঁচে তাঁরা গা সেঁকেন৷ ভারী রাইফেল কাঁধে প্রতিদিন অন্তত ৮ ঘন্টা করে ডিউটি৷ ওয়াচ টাওয়ার থেকে বাজপাখির মতো নজর রাখতে হয় আশেপাশের গ্রামগুলির উপর৷ বিএসএফ-এর মহিলা জওয়ানরা পুরুষদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যে কোনও লড়াই লড়তে প্রস্তুত৷ কনস্টেবল লক্ষ্মীর কথাতেই সেটা স্পষ্ট৷ “যে কোনও যুদ্ধে অংশ নিতে আমরা এখনই তৈরি”, বলছেন সাম্বা সেক্টরে প্রহরারত লক্ষ্মী৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.