ফাইল ফটো
অর্ণব আইচ: করোনার সঙ্গে লড়তে হবে। তাই শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। যে জন্য ঠিকঠাক খাওয়াদাওয়া, ভিটামিন, প্রোটিন, মিনারেলের পর্যাপ্ত জোগান তো চাই-ই। একধাপ এগিয়ে থাকতে এর সঙ্গে প্রাণায়ামকেও জুড়ে দিন।
বাংলাদেশ সীমান্তের এপারে অস্ত্র হাতে টহলরত বিএসএফ জওয়ানদের এই নির্দেশই দিয়েছেন কর্তারা। ইতিমধ্যে দিল্লি ও ত্রিপুরার বিএসএফ জওয়ানরা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বাদ পড়েনি কলকাতাও। কেন্দ্রীয় টিমের কনভয়ের পাইলট কারে থাকা ৬ জন বিএসএফ কর্মীর শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাস ধরা পড়েছে। বহু বিএসএফ কর্মী রয়েছেন কোয়ারান্টাইনে। সীমান্তে মোতায়েন বিএসএফ জওয়ানদের প্রতি মুহূর্তের আতঙ্ক, যদি করোনা থাবা বসায়? এই অবস্থায় করোনা থেকে বাঁচতে নিজেদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে বিএসএফ। বিএসএফের ডিআইজি সুরজিৎ সিং গুলেরিয়া বলেন, “করোনা আবহে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন ও প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি করে খেতে বলা হচ্ছে জওয়ান ও অফিসারদের। এ ছাড়াও সদর ও বর্ডার আউটপোস্টের ডিউটিতে থাকা জওয়ানদের বলা হয়েছে, তঁারা যেন অবশ্যই প্রাণায়াম করেন। তার সঙ্গে যোগাভ্যাসও বজায় রাখেন।”
বিএসএফ-এর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই নির্দেশ পাওয়ার পর থেকেই প্রাণায়ামের সূর্যভেদন, নাড়ীশুদ্ধি, ভ্রামরী, অনুলোম-বিলোম, কপালভার্তি অভ্যাস করতে শুরু করেছেন তাঁরা। প্রায় প্রত্যেক বিএসএফ ব্যারাক ও আউটপোস্টে প্রাণায়াম জানেন, এমন লোক রয়েছেন। তাঁরাই অন্যদের শেখাচ্ছেন। যেহেতু করোনার হামলায় ফুসফুস আক্রান্ত হয়, তাই প্রাণায়ামের মাধ্যমে শ্বাসক্রিয়া সচল রেখে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। কিছুদিন আগে মিরাঠে শুধু প্রাণায়াম করেই সুস্থ হয়ে ওঠেন ‘মার্চেন্ট নেভি’র এক কর্মী। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ওই ব্যক্তির শরীরে ধরা পড়েছিল করোনা। লালারস পরীক্ষায় পর পর করোনা পজিটিভ হওয়ায় তিনি প্রাণায়াম শুরু করেন। তাঁর এক ভাই এক যোগগুরুর কাছে প্রক্রিয়া জেনে তাঁকে বশিষ্ঠ প্রাণায়াম করতে বলেন। সঙ্গে অনুলোম-বিলোম ও ভ্রামরী। তিনি অক্ষরে অক্ষরে পরামর্শ পালন করেন। পাঁচবার পজিটিভের পর তাঁর শরীরে করোনা নেগেটিভ ধরা পড়ে।
পশ্চিমবঙ্গ যোগ ও ন্যাচেরোপ্যাথি কাউন্সিলের সভাপতি ডা. তুষার শীল জানান, প্রাণায়াম করলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। বাড়ে ফুসফুসের ধারণ ক্ষমতা। ফলে বেশি পরিমাণ অক্সিজেন রক্তে মেশে। তাই করোনা রোধে প্রাণায়াম অত্যন্ত উপযোগী। এ ছাড়া ‘ষঠকর্ম’ করলেও করোনা প্রতিরোধের লড়াইয়ে অনেকটা এগিয়ে থাকা যায়। নাকের এক ছিদ্র দিয়ে জল নিয়ে অন্য ছিদ্র দিয়ে জল বের করলে নাক পরিষ্কার থাকে। এই সময় সকালে খালি পেটে কয়েক গ্লাস উষ্ণ জল খেয়ে তার পর গলায় আঙুল দিয়ে সেই জল বের করে দিলে গলায় আটকে থাকা কফও বেরিয়ে যাবে। করোনা রোধে এই ক্রিয়া খুব উপকারী। তবে যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক বা রেটিনায় সমস্যা রয়েছে, তাঁদের এই ক্রিয়া না করাই উচিত। এই সময় শীৎকারী ও শীতলী নামের প্রাণায়ামগুলি না করাই ভাল বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.