সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কথায় বলে আপনি আচরি ধর্ম অপরে শিখাও। অর্থাৎ তুমি ভাল কাজ করলে তবেই অন্যকে তা শেখানো সম্ভব। পণপ্রথাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এক বিএসএফ জওয়ানও সমাজকে দৃষ্টান্তমূলক শিক্ষা দিলেন। শ্বশুরবাড়ির তরফে পণ হিসেবে ১১ লক্ষ টাকার প্রস্তাব খারিজ করে দিলেন পাত্র। জওয়ানের এমন বলিষ্ঠ পদক্ষেপ প্রশংসা কুড়োচ্ছে নেটিজেনদের।
গত শনিবার জয়পুরের আম্বা বাড়ি এলাকায় বসেছিল জওয়ান জিতেন্দ্র সিংয়ের বিয়ের আসর। দেশের সেবায় নিয়োজিত পাত্রকে পেয়ে খুশি শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। এমন সুপাত্রের জন্য ভালবেসে পণ হিসেবে ১১ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন তাঁরা। কিন্তু পাত্রের কানে খবর যেতেই তিনি সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। জানিয়ে দেন, পণ নিতে তিনি আগ্রহী নন। আশীর্বাদ স্বরূপ ১১ টাকা ও একটি নারকেল দিলেই তিনি খুশি হবেন। জিতেন্দ্রর কথায় প্রথমে খানিকটা ঘাবড়েই গিয়েছিলেন কনের বাড়ির লোকেরা। হয়তো কোনও আচরণে অসম্মানিত হয়েছেন তিনি। এমনটাই ভেবে বসে পরিবার। কিন্তু জওয়ান যখন বুঝিয়ে বলেন, তিনি পণের বিরোধী, তখন বিষয়টি পরিষ্কার হয়। আনন্দে আপ্লুত হয়ে ওঠে কনের পরিবার।
কাজের সূত্রে জিতেন্দ্র থাকেন ছত্তিশগড়ে। সাত পাকে বাঁধা পড়তে ছুটি নিয়ে সোজা পৌঁছে গিয়েছিলেন জয়পুর। সেখানেই অগ্নিসাক্ষী রেখে চঞ্চল শিখাওয়াতের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করলেন তিনি। আর বিয়ের দিনই পণপ্রথার বিরোধিতা করে নতুন পরিবারের চোখে হয়ে ওঠেন নায়ক। কনের বাবা গোবিন্দ সিং শিখাওয়াত বলছেন, “প্রথমে পাত্রের কথা শুনে চমকে গিয়েছিলাম। ভেবেছি, হয়তো আরও বেশি পণ চান তাঁরা। অথবা আমাদের ব্যবহারে তাঁরা দুঃখিত। পরে জানতে পারি, গোটা পরিবারই পণ নিতে আগ্রহী নয়।” জিতেন্দ্রর কথায়, শিক্ষিতা আইন পাশ করা মেয়েকে পাত্রী হিসেবে পেয়েই তিনি খুশি। তাঁর পরিবারও চায়, বিয়ের পর উচ্চশিক্ষায় যেন মন দেন চঞ্চল।
এ সমাজে পণপ্রথা এখনও অভিশাপের মতো। পণ না দিতে পারায় শ্বশুরবাড়ির লোকেদের হাতে নির্যাতনের শিকারও হতে হয় গৃহবধূদের। সেখানে জিতেন্দ্র ও তাঁর পরিবারের এই সিদ্ধান্ত গোটা সমাজের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে রইল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.