কেসিআর
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত লোকসভা ভোটের আগে অ-বিজেপি, অ-কংগ্রেসি ‘ফেডারেল ফ্রন্ট’ গঠনের পক্ষে প্রচার চালিয়েছিল তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি (টিআরএস)। নাম বদলে তারা এখন ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)। পাশাপাশি পালটেছে রাজনৈতিক অবস্থানও। দলীয় সূত্রের খবর, কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলির জোটে যোগ দেওয়ার বিষয়ে তারা এখন খোলা মনেই চিন্তাভাবনা করছে। তবে সেই জোটের নেতা বা প্রধানমন্ত্রী পদে রাহুল গান্ধীকে (Rahul Gandhi) মানতে এখনও রাজি নয় তারা। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সফল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা নীতীশ কুমার থাকতে তারা রাহুলকে যে গুরুত্ব দেবে না, সেটাও বিআরএস স্পষ্ট করে দিয়েছে।
সর্বভারতীয় স্তরে বৃহত্তর ভূমিকা নেওয়ার লক্ষ্যেই দলের নাম পালেছিলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। বিভিন্ন রাজ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিচ্ছিলেন। পাশাপাশি, নিজ রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর শত্রুতাও চরমে। কিন্তু আঞ্চলিক দলগুলির উপর বিভিন্ন রাজ্যে প্রবল চাপ তৈরি করেছে বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকার। ব্যতিক্রম নয় তেলেঙ্গানাও। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে বিরোধী নেতা এবং প্রতিবাদী কণ্ঠ দমনে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
তাই একক শক্তিতে বিজেপিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় বুঝেই সুর নরম করতে বাধ্য হয়েছেন কেসিআর। দলের এক প্রবীণ নেতার দাবি, “ভারত শীঘ্রই পাকিস্তানে পরিণত হবে। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় বিরোধী নেতাদের দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছিল। এবার তাঁরা ক্ষমতায় আসার পর ইমরানের প্রাণসংশয় হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রত্যেককে একজোট হতেই হবে। এটা ২০১৯ নয়। দেশ বাঁচাতে বিজেপিকে হারানোই একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত।” এই যুক্তিতেই বিরোধী দলগুলির বৃহত্তর জোটের পক্ষে সওয়াল করছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সদ্যই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। নীতীশ আবার সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবের সঙ্গেও দেখা করেছেন।
উল্লেখ্য, দিল্লির আবগারি কেলেঙ্কারিতে ইডি তদন্তের মুখে পড়েছেন কেসিআর-এর কন্যা, প্রাক্তন সাংসদ কে কবিতা। তাই বিআরএস চাইছে, জাতীয় রাজনীতিতে নিজেদের শক্তিক্ষয়ের কথা মেনে নিয়ে আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে প্রাক-নির্বাচনী জোট গড়ে তুলুক কংগ্রেস। মমতার (Mamata Banerjee) ফর্মুলা মেনেই কেসিআর-ঘনিষ্ঠ এক নেতার দাবি, “কংগ্রেস তাদের প্রাপ্য মর্যাদা পাবে। যেখানে তারা শক্তিশালী, সেখানে তারাই সামনে থাকুক। কিন্তু অন্যত্র যে দল শক্তিশালী, সেখানে তাদের জায়গা ছেড়ে দিক। তবেই কার্যকর বিরোধী জোট তৈরি সম্ভব।”
কিন্তু আগামী লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদির বিকল্প হিসাবে রাহুল গান্ধীকে তুলে ধরতে বিআরএস ইচ্ছুক নয়। ২০১৯-এই তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করে দলের বার্তা, ওই দ্বৈরথ হলে বিরোধীদের হার অনিবার্য। বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে এবং প্রশাসক হিসাবে সফল হয়েছেন মমতা-নীতীশরা। কিন্তু রাহুলের সাফল্য কোথায়? তিনি সরকারিভাবে দলের নেতাও নন। চলতি বছরের শেষে তেলেঙ্গানায় ভোট। আপাতত সেটাই বিআরএসের পাখির চোখ। তবে কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানে নির্বাচনের ফলাফল বিরোধী জোটের চেহারাটা আরও স্পষ্ট করবে বলেই বিআরএস মনে করছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.