সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একরত্তি বাচ্চাটা জানত মা-বাবার সঙ্গে সে মন্দিরে যাচ্ছে৷ স্টেশনেই রাত কাটিয়েছে তারা৷ দিনের আলো ফুটেছে৷ তার ঘুম ভেঙেছে৷ কিন্তু মা-বাবার ঘুম ভাঙেনি৷ আর তাই সে অপেক্ষা করে চলেছে৷ পাশে বসে নিশ্চিন্তে খেলা করে চলেছে৷ সে জানত না যে তার মা-বাবা আর কোনওদিনই উঠবে না৷ কেননা ঘুমের ভিতরই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে রেল পুলিশ৷
মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে কর্নাটকের মুনিরাবাদ রেল স্টেশনে৷ মোটে তিন বছরের বাচ্চাকে একা স্টেশনে ঘোরাঘুরি করতে দেখে অনেকেরই কৌতূহল হয়৷ তার থেকে জিজ্ঞেস করলে জানা যায়, তার মা-বাবা ঘুমোচ্ছে৷ তারা কখন জাগবে সেই অপেক্ষাতেই সে ঘোরাঘুরি করছে৷ দিনের ব্যস্ত সময়ে মা-বাবা ঘুমোচ্ছে শুনে খটকা লাগে অনেকের৷ বাচ্চাটির সঙ্গে তার মা-বাবার কাছে গেলে দেখা যায়, সত্যিই দু’জন স্টেশনে শুয়ে আছেন৷ বাচ্চাটি বারবার তাঁদের জাগানোর চেষ্টা করলেও কোনওরকম সাড়া মিলছে না৷ আর এরপরই রেল পুলিশকে খবর দেওয়া হয়৷ পুলিশ এসে উদ্ধার করে মৃতদেহ দু’টিকে৷
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে ইরানা তলওয়ার (৫০) ও মঞ্জুলা তলওয়ারের (৪০) সন্তান এই বাচ্চাটি৷ তাঁরা কোনও এক মন্দিরে যাচ্ছিলেন, রাত কাটান মুনিরাবাদ স্টেশনে৷ কিন্তু ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁদের৷ পুলিশের অনুমান, আত্মহত্যা করেছেন দম্পতি৷
কিন্তু এই কঠোর বাস্তব বুঝতে নারাজ বছর তিনেকের বাচ্চাটি৷ যাত্রীসাধারণ থেকে শুরু করে পুলিশ-সকলের সামনে তার একটাই কথা, মা-বাবা ঘুমোচ্ছে৷ জেগে উঠলেই যে তারা মন্দিরে যাবে সে কথা জানাতেও ভোলে না৷ নিষ্পাপ মুখে এ কথা শুনে চোখের জল সামলাতে পারেননি রেলপুলিশের কর্মীরাও৷ এতটুকু বাচ্চাকে কীভাবে মা-বাবার মৃত্যুসংবাদ দেওয়া যায় তাও বুঝে উঠতে পারেননি তাঁরা৷ মোবাইল সূত্র ধরে বাচ্চাটির আত্মীয়দের খোঁজ করে তাদের হাতে তাকে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে৷ আর যদি কেউ দায়িত্ব নিতে না আসে, তবে তাকে শিশুরক্ষা কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হবেই বলে ঠিক করেছে রেলপুলিশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.