সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পড়া না পারলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা বকাবকি করেন। কখনওবা দু-এক ঘা বসিয়েও দেন। তা নিয়ে শিশুদের রাগ তো হয়েই। লকডাউনে সবার ছুটি। কিন্তু পাঁচ বছরের এক খুদেকে রোজ পড়তে যেতে হচ্ছিল। পড়ে কাকার সঙ্গে ফেরার সময় রাস্তা আটকায় পুলিশ। কেন রাস্তায় বেরিয়েছে জানতে চাইতেই, গৃহশিক্ষিকার নাম-ধাম বলে দিল সেই খুদে। এমনকী, পুলিশকে নিয়ে শিক্ষিকার বাড়িতেও হাজির হয় সে। শেষঅবধি, শিক্ষিকাকে লিখিত মুচলেকা দিতে হয়, লকডাউন চলাকালীন তিনি আর পড়াবেন না।পাঞ্জাবের বাটালা এলাকায় এমন ঘটনায় হতবাক এলাকাবাসী। ঠিক কী হয়েছিল?
করোনা সংক্রমণ রুখতে চলছে লকডাউন। জরুরি কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে পা রাখা নিষিদ্ধ। বন্ধ রয়েছে স্কুল-কলেজও। অনেকক্ষেত্রে স্কুল, কলেজ থেকে অনলাইনে ক্লাস চলছে। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ রয়েছে গৃহশিক্ষকতাও। কিন্তু পাঞ্জাবে লকডাউন এড়িয়েও চলছে গৃহশিক্ষকতা। এমনকী, সেই শিক্ষিকার কাছে পড়তে নিয়ে যাচ্ছে পরিবাররের সদস্যরাই। ফলে শিকেয় উঠেছে লকডাউন।
শনিবার পাঞ্জাবের বাটলা এলাকায় এক পাঁচ বছরের খুদেকে কোচিং থেকে নিয়ে ফিরছিলেন তার কাকা। এমন সময় রাস্তা আটকায় বাটলার ডিএসপি গুরদীপ সিং। লকডাউন ভেঙে রাস্তায় বেরিয়েছেন কেন জানতে চাইতেই ঝুলি থেকে আসল বিড়াল বেরিয়ে পড়ে। পাঁচ বছরের খুদেটি জানায়, সে পড়তে গিয়েছিল। কিন্তু লকডাউনে তো গৃহশিক্ষকতাও বন্ধ থাকার কথা। ফলে পুলিশ আধিকারিক সেই শিক্ষকের নাম, ঠিকানা জানতে চান। শিশুটির কাকা বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেই খুদে তো নাছোড়। পুলিশ আধিকারিক জিজ্ঞেস করতেই শিক্ষিকার নাম-ধাম বলে দেয়। এমনকী, তার কাকা তাকে থামাতে চেষ্টা করলেও কোনও লাভ হয়নি। পুলিশ আধিকারিককে নিয়ে সেই শিক্ষিকার বাড়ির দোরগোড়ায় হাজির হয় খুদে পড়ুয়া।
শিক্ষিকা দরজা খুলতেই পুলিশ আধিকারিক জানতে চান, লকডাউনের মাঝে তিনি কেন পড়াচ্ছেন? শিক্ষিকা তাঁর দাবি উড়িয়ে দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা করেন, কিন্তু সেখানেও বাধ সাদে ওই খুদে। বেমালুম বলে দেয়, লকডাউনের প্রথম দিন থেকে একটানা তারা তিনজন পড়তে আসছে। খুদে পড়ুয়ার এহেন অকপট স্বীকারোক্তিতে বেকায়দায় পড়েন শিক্ষিকা। শেষ অবধি লকডাউন মেনে চলবেন এই মর্মে মুচলেকা দিতে রেহাই মেলে।
ঘটনা প্রসঙ্গে, বাটালার ডিএসপি গুরদীপ সিং বলেন, “আমরা বারবার লকডাউন মানাপ জন্য আরজি জানাচ্ছি। কিন্তু অনেকেই তা তা শুনছেন না। ওই শিশুটির পরিবারও লকডাউন ভেঙে পড়তে পাঠাচ্ছিল। আর ওই শিক্ষিকাও পড়াচ্ছিলেন। যদিও তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। লকডাউন চলাকালীন আর পড়াবেন না বলেও জানিয়েছেন।” কিন্তু ওই খুদের এহেন কীর্তিতে স্তম্ভিত শহরবাসী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.