সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রায়গড়ের পাঁচতলা বিল্ডিংয়ের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে টানা ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অপারেশন চালিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF)। সময় যত এগোচ্ছিল ততই বাঁচার আশা হারাচ্ছিলেন কংক্রিটের চাদরের নিচে চাপা পড়ে থাকা মানুষগুলো। কিন্তু ওই যে কথায় আছে, রাখে হরি তো মারে কে! আর তাই বোধহয় এ যাত্রায় সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এল বছরে চারেকের মহম্মদ বাঙ্গি।
মহারাষ্ট্রের রায়গড়ে (Raigad) ১৯ ঘণ্টা উদ্ধারকার্য চালানোর পর আচমকাই শিশুর কান্নার আওয়াজ কানে যায় উদ্ধারকারীদের। ছোট্ট প্রাণটিকে বাঁচাতে তখন মরিয়া এনডিআরএফের টিম। নতুন উদ্যমে শুরু হয় ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ। অবশেষ মৃত মায়ের দেহের পাশ থেকেই উদ্ধার করা হয় চার বছরের এক শিশুকে। কংক্রিটের চাঙড় খসে পরে মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে। রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। দাদা-দিদির মৃতদেহের পাশে শুয়ে জলের জন্য অঝোরে কেঁদে যাচ্ছে মহম্মদ। মা তাকে বুকে আগলে রেখেছেন। ছোট্ট প্রাণটাকে বেঁচে গেলেও মৃত্যু হয় তার মায়ের। আর তার সেই আকুল কান্নাই এ যাত্রায় প্রাণে বাঁচিয়ে দিল তাকে। এদিকে তাকে বাঁচাতে ঠিক কতটা মরিয়া ছিল বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা তা সেই মুহূর্তের ভিডিওতে তাঁদের চোখ-মুখের অভিব্যক্তি বলে দিচ্ছিল। তরতাজা প্রাণটিকে উদ্ধার করতেই উল্লাসে ফেটে পড়েছিলেন বাহিনীর সদস্যরা। সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রেচারে চাপিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হয় মহম্মদকে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মাথার আঘাত গুরুতর হলেও আপাতত আশঙ্কামুক্ত সে। আর হাসপাতালের বেডে শুয়ে একরত্তি মহম্মদ শুনিয়েছে তার ভয়াবহ সেই অভিজ্ঞতার কথা।
#WATCH: A 4-year-old boy was rescued from under the debris at the site of building collapse in Mahad, Raigad. #Maharashtra pic.twitter.com/polMUhzmqN
— ANI (@ANI) August 25, 2020
মহম্মদের কথায়, “আচমকাই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বিল্ডিংটা। সকলের চিৎকার, কান্না শুনতে পাচ্ছিলাম। পাশে দাদা-দিদিকে দেখতে পেলেও কেউ কথা বলছিল না। শুয়ে ছিল। মা আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে রেখেছিল। ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে কতক্ষণ আটকে ছিলাম জানি না। ভীষণ জলতেষ্টা পাচ্ছিল। ঈশ্বরকে বলছিলাম একটু জল দিতে। ঠিক তখনই কেউ বা কারা এসে আমাকে সেখান থেকে উদ্ধার করল”। প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধে নাগাদ ভেঙে পড়েছিল রায়গড়ের অভিজাত এলাকার এই পাঁচতলা আবাসন। এখানে মোট ৪৭টি পরিবারের ২০০ জন বসবাস করতেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হয়েছে ১২টি মৃতদেহ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.