বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: সাধারণ মধ্যবিত্ত ও গরিব মানুষের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় বাজেট। এই বাজেট কীভাবে দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে তা বোঝাতে এবার দেশজুড়ে প্রচার অভিযানের সিদ্ধান্ত নিল গেরুয়া শিবির। বৃহস্পতিবার থেকেই প্রচার শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রচার সংগঠিত করতে ৯ জনের কমিটিও গঠন করেছেন সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Nadda)। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদিকে। ১২ দিন ধরে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে মানুষের দরজায় গিয়ে জনপ্রতিনিধিদের প্রচার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিরোধী দলনেতা, সাংসদ ও বিধায়কদের প্রচার অভিযানে শামিল হতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দেশের সিংহভাগ মানুষ বাজেটের ভাল খারাপ বোঝে না। তাই লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এই প্রচার অভিযান বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
গত রবিবার মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের প্রচারে জোর দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে এটাই দ্বিতীয় মোদি সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট (Union Budget 2023)। বৈঠকে মন্ত্রীদের জানান, ১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে অনেক জনমুখী প্রকল্পই নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সেই প্রকল্পগুলি সম্পর্কে মানুষ এখনও অন্ধকারে। তাই ঘরে ঘরে পৌঁছে কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে অবগত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তদের কাছে এসব প্রকল্পের কথা পৌঁছে দিতে হবে মন্ত্রীদেরই। কিন্তু সশরীরে গিয়ে বোঝানোর আলাদা গুরুত্ব আছে। তবেই নিম্নবিত্তরা বুঝতে পারবেন। কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদেরই জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তাতেই বাড়বে জনসংযোগ। দলের ভোটব্যাংকে সাফল্য পাওয়া যাবে।
প্রধানমন্ত্রী ঠিক কী চাইছেন তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি গেরুয়া শিবিরের শীর্ষনেতৃত্বের। তাই তড়িঘড়ি প্রচারের রুটম্যাপ তৈরি করেন অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা ও বিএল সন্তোষরা। রাজ্যভিত্তিক প্রচার কর্মসূচি তৈরি করতে সুশীল মোদির সঙ্গে কাজ করবেন আরও আটজন। এরা হলেন জাতীয় যুব ও কৃষক মোর্চার সভাপতি ও বাংলার পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল। দেশের সব রাজ্যের রাজধানী-সহ ৫০টি গুরুত্বপূর্ণস্থানে ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি বাজেট সংক্রান্ত আলোচনার আয়োজন করা হবে। সেই আলোচনায় কেন্দ্রে হেভিওয়েট মন্ত্রী, শীর্ষনেতৃত্ব ও অথবা অর্থনীতিবিদরা হাজির থাকবেন।
বিজেপিশাসিত রাজ্যে প্রচারের দায়িত্বে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রীরা। অবিজেপি রাজ্যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিরোধী দলনেতা, রাজ্য সভাপতি ও সাংসদদের। প্রতিটি রাজ্যে কর্মসূচির রোডম্যাপ তৈরি করে দিল্লির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি রাজ্যের কর্মসূচিতে যোগ দেবেন কেন্দ্রের হেভিওয়েট মন্ত্রী ও দলের শীর্ষনেতৃত্ব। যেমন আগামী ১১ জানুয়ারি বাংলায় যাওয়ার কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর। তবে এখনও সফরসূচি চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। কিন্তু আগামী ১২দিন জেলায় জেলায় দলের নেতৃত্ব ও জনপ্রতিনিধিদের মানুষের দরজায় কড়া নেড়ে বাজেটের সুফল বোঝানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.