বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের চাপে চিড়েচ্যাপ্টা হাল বঙ্গের গেরুয়াকুলের নেতাদের। পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের ক্ষোভ মেটানোর পাশাপাশি সংগঠনে জোর ঝাঁকুনি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি।
বৃহস্পতিবার দলের প্রতিষ্ঠা দিবস থেকে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে রাজ্যের ৭২ হাজার বুথে কমপক্ষে একটি করে দেওয়াল লেখার নির্দেশ দিয়েছেন অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা (JP Nadda) ও বিএল সন্তোষরা (BL Santosh)। স্লোগানও বেধে দেওয়া হয়েছে। প্রতি বুথের একটি দেওয়ালে ‘আরেকবার ফের মোদি সরকার, আরেকবার ফের বিজেপি’ লিখতে হবে। তাতেই বেকায়দায় সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষরা। রাজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ বুথ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। তারপরেও কয়েক হাজার বুথে একজনও কর্মী নেই। ফলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ পালন কীভাবে সম্ভব তা ভেবেই মাথায় হাত বঙ্গ বিজেপির শীর্ষনেতৃত্বের। এছাড়াও প্রতিটি মণ্ডলে বুদ্ধিজীবী ও সমাজসেবকদের তালিকা তৈরি করে চিন্তন শিবির আয়োজনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দলের প্রতিষ্ঠা দিবস। সকালে দলের কর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। রাজ্যের প্রতিটি বুথে মোদির ভাষণ শোনানোর ব্যবস্থা করতে হবে বলে বঙ্গ নেতাদের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এখানেই শেষ নয়, বঙ্গে দলের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত দিল্লি। গোষ্ঠীকোন্দল জর্জরিত দল। নেতাদের মধ্যে মুখ দেখাদেখি কার্যত বন্ধ। পুরনো কর্মীদের দলের কাজে অনীহা। সদস্য সংখ্যা নিম্নমুখী। প্রবল চিন্তায় ফেলেছে শাহ, নাড্ডাদের। এহেন পরিস্থিতিতে বাংলা থেকে গতবারের তুলনায় লোকসভায় কয়েকটি আসন বেশি পেতে হলে প্রথমেই সংগঠনে ঝাকুনি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। আর দিল্লির নির্দেশ হাতে পেতেই মাথায় হাত বঙ্গের গেরুয়া শিবিরের।
বৃহস্পতিবার থেকে এক সপ্তাহ সংবিধান দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে গেরুয়া শিবির। তারই অংশ হিসাবে আগামী কয়েকদিনের কর্মসূচি বেধে দেওয়া হয়েছে। নির্দেশে বলা হয়েছে, ১৪ এপ্রিলের মধ্যে রাজ্যের প্রতি বুথে কমপক্ষে একটি করে দেওয়াল লিখতেই হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ কীভাবে বাস্তবে করে দেখান সম্ভব তা চিন্তায় ফেলেছে সুকান্ত, শুভেন্দুদের। দলের এক রাজ্যনেতা জানান, বাংলায় যে সংখ্যক বুথ রয়েছে তার ৩০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ২১ হাজার বুথে কোনও কর্মী নেই। বাকি বুথে কর্মী থাকলেও সবক্ষেত্রে কর্মীর অভাবে বুথ কমিটি গঠন হয়নি। এইসব বুথে কীভাবে দেওয়াল লেখা সম্ভব তা চিন্তায় ফেলেছে বঙ্গ বিজেপিকে। সূত্রের খবর, নির্দেশ হাতে পাওয়ার পরই অমিত শাহ (Amit Shah) ও নাড্ডার কাছে সংগঠনের দুর্বলতায় কথা স্বীকার করে নিয়েছে বঙ্গের গেরুয়াকুলের নেতারা। তবে মণ্ডল ধরে ধরে চিন্তন শিবির করার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা সংগঠিত করা হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.