নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: দুর্নীতির দায়ে অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal) ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো তৃণমূল নেতাদের গ্রেপ্তারিকে হাতিয়ার করে বিজেপি যে রাজ্যজুড়ে জঙ্গি আন্দোলন শুরু করছে তা বৃহস্পতিবার স্পষ্ট করে দিলেন দলের পশ্চিমবঙ্গের নয়া পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল। অনুব্রত গ্রেপ্তারের ঘন্টাদেড়েক বাদে দিল্লিতে ভিপি হাউজের বাসভবনে বসে জানিয়ে তিনি বলেন, “সকাল থেকে অনুব্রত গ্রেপ্তার এবং দলের কার্যকর্তাদের রাস্তায় নেমে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মিষ্টি বিলি, কোর্টে বিক্ষোভ, সব খবরই এখানে বসে জেনে যাচ্ছি।” এরপরই পার্থ-অনুবতর গ্রেপ্তারিকে হাতিয়ার করে বঙ্গ বিজেপির নয়া কর্মসূচির ইঙ্গিত দিয়ে সুনীল বলেন, “বাংলায় তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলছে। সেই লড়াইকে আরও জোরালোভাবে আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরার কর্মসূচি নেওয়া হবে।”
দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই রাজ্য ওড়িশা ও তেলেঙ্গানার দলীয় সাংসদ-নেতাদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি বাংলার দুই সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee) ও সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) সঙ্গেও বিস্তারিত কথা বলেছেন নয়া বিজেপি পর্যবেক্ষক। স্বাধীনতা দিবস পার করেই তিনি কলকাতায় যাচ্ছেন এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বিভক্ত বঙ্গ বিজেপির জন্য যে অনেকটাই সময় দিয়ে সকলের কথা শুনবেন তাও এদিন স্পষ্ট করেছেন নয়া পর্যবেক্ষক। ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর এক প্রশ্নের উত্তরে সুনীল বলেন, “কলকাতায় গিয়ে এবার দলের রাজ্য শাখার পরবর্তী রণকৌশল ঠিক করার আগে খুঁটিনাটি অনেক তথ্য জানতে বাড়তি সময় দিতে হবে। সবার সঙ্গেই কথা বলব। জেলা থেকে রাজ্য, সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে তৃণমূলের দুর্নীতি নিয়ে আমাদের আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচির রূপরেখা চূড়ান্ত করব।”
এদিন রাজধানীর ভিপি হাউসের বাসভবনে উপচে পড়া ভিড়ের মধ্যে থেকে কিছুটা সময় বের করে নিয়ে অনুব্রতর গ্রেপ্তারি ও তৃণমূলের দুর্নীতি নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। দুর্নীতি ইস্যুকে সামনে রেখেই যে বিজেপি আগামী দিনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জঙ্গি আন্দোলন চালাবে সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপির চাণক্য সুনীল। রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ তাঁকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি বাংলার সংগঠন নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনাও সেরেছেন বলে খবর। বাংলা সফর সেরে ফিরে আসার পরে তাঁর সঙ্গে দিলীপ ঘোষ দিল্লীতেই আলোচনায় বসবেন। শাহ ঘনিষ্ঠ নেতা বনশল এর আগেও বাংলাতে কাজ করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গ বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সম্পর্কে তিনি অবগত। সেই সমস্যা সামলে কিভাবে রাজ্য নেতৃত্বকে একজোট করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে জোরদার করবেন সেটাই বনশলের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহালমহল।
সুনীল বনশলের সুরেই বীরভূমের প্রাক্তন সাংসদ ও বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা দিল্লিতে দাবি করেন, সকাল সাড়ে এগারাটোর পরে শাহ’র দপ্তর থেকে ফোন করে দিল্লিতে থাকতে বলা হয়েছে। খুব শীঘ্রই বীরভূম নিয়ে তথা জানতে তাঁকে ডেকে নেওয়া হবে। তাঁর আরও দাবি, “বীরভূমের ৭২জন তৃণমূল নেতার নামের তালিকা আছে আমার কাছে। যেখানে ওর ঘনিষ্ঠ নেতা, কাউন্সিলর, পঞ্চায়েত সদস্য, টাকা খাটাতেন এমন ব্যবসায়ী যারা আবার নিজেদের সমাজসেবী বলতেন, বালি-পাথর ব্যবসায়ী, ব্লক সভাপতি, ওর বাড়ির কাজের লোক যাদের নামে সম্পত্তি রয়েছে এই গোটা তালিকা আগামী সপ্তাহে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে জমা দেব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.