ফাইল ছবি
নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: দলে তৈরি নেই দ্বিতীয় প্রজন্মের নেতৃত্ব, রাজ্যস্তর থেকে উঠে আসছে না নতুন কোনও নাম। অথচ সামনেই একাধিক রাজ্যের নির্বাচন। যা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ বিজেপির (BJP)কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কপালে। বর্তমানে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi), কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah), প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, পরিবহণমন্ত্রী নীতিন গড়কড়িরা রয়েছেন। আবার প্রথম সারিতেই রয়েছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান, রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া, কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পার মতো নেতারা। এঁরা রাজ্যস্তরে থাকলেও জাতীয় রাজনীতির আঙিনাতেও তাঁদের সমান গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু এর পরবর্তী প্রজন্ম কোথায়? এই নাম ক’টি বাদ দিলে বিজেপির আর সেরকম পরিচিত নেতা কোথায় রয়েছেন? এটাই এখন বিজেপির কাছে বড় প্রশ্ন।
দেশের হাতে গোনা কয়েকটি রাজ্য বাদ দিলে তেমনভাবে কোনও নেতাই নেই বিজেপিতে যাঁকে লোকে একডাকে চেনে। অথচ আগামী বছরের শুরু থেকেই কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানে বিধানসভা ভোট রয়েছে। এই তিন রাজ্যে যথাক্রমে ইয়েদি, চৌহান, রাজে ছাড়া কোনও মুখেরই তেমন পরিচিতি নেই। এমনকি কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের নিজের রাজ্যের বাইরে তেমন পরিচিতি নেই। মধ্যপ্রদেশে (Madhya Pradesh) কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগদানকারী নেতা বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে দ্বিতীয় প্রজন্মের নেতা হিসেবে ধরা চলে।
তবে জনপ্রিয়তার নিরিখে নিজের রাজ্য তো দূর অস্ত, এলাকাতেই সেভাবে প্রভাব নেই তাঁর। দ্বিতীয় সারিতে থাকা আরেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিমাচল প্রদেশের নেতা অনুরাগ সিং ঠাকুরের অবস্থাও তথৈবচ। সদ্য হিমাচল বিধানসভা ভোটে তাঁর বাড়ি যে বিধানসভা কেন্দ্রে সেই হামিরপুর তো বটেই, এমনকি তাঁর নিজের বুথেও বিজেপি হেরেছে। দলে দ্বিতীয় সারির নেতাদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, ভূপেন্দ্র যাদব, গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতরা রয়েছেন বটে। তবে এঁদের রাজ্যস্তরে প্রভাব সীমিতই। এর বাইরে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath), মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ছাড়া চোখে পড়ার মতো নেতা প্রায় নেই।
রাজ্যস্তর থেকে নতুন নেতা তৈরির উপর তাই জোর দিতে চাইছে বিজেপি। কীভাবে দলের দ্বিতীয় প্রজন্মের নেতাদের প্রস্তুত করা হবে, সেই সমাধানসূত্র বার করতে হবে দলীয় পদাধিকারীদের। চলতি মাসে দিল্লিতে (Delhi) বিজেপির সদর দপ্তরে দু’দিনব্যাপী পদাধিকারী বৈঠকে মোদি-শাহরা বাকি বিষয়ের সঙ্গেই অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে এ নিয়েও আলোচনা করেছেন। সেই আলোচনায় উঠে এসেছে বিজেপিতে অটলবিহারী বাজপেয়ী, এল কে আডবাণীর সময়ের প্রসঙ্গ। সেসময় এই দুই বড় নেতা, মুরলী মনোহর যোশীর সঙ্গেই বর্তমানের শীর্ষ নেতৃত্বের অধিকাংশই দ্বিতীয় প্রজন্মের নেতা হিসেবে তৈরি ছিলেন। তালিকায় ছিলেন প্রয়াত অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজ, প্রমোদ মহাজন, গোপীনাথ মু্ন্ডে, অনন্ত কুমারের মতো নেতারা। ছিলেন প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডুরাও।
দ্বিতীয় প্রজন্মের নেতাদের সামনে নিয়ে আসার উপর জোর দিতে চাইছে বিজেপি। ৭৫ বছর বয়স পেরলে দলীয় নেতাদের নির্বাচনে টিকিট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছে। তরুণ মুখদের উপর ভরসা করে আগামিদিনে চলতে হবে, সেই বার্তা মোদি নিজেও দিয়েছেন। যার প্রতিফলন আগামিদিনে রাজ্যওয়াড়ি নির্বাচনগুলির পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনেও দেখা যাবে বলেই বিজেপির এক কেন্দ্রীয় স্তরের নেতা জানিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.