সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াতের আচরণের ফলে দল ও রাজ্যের মানুষ অপমানিত হচ্ছেন। তাই তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক। সম্প্রতি এমনই দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন উত্তরাখণ্ড (Uttarakhand) -এর বিজেপি বিধায়ক ও প্রাক্তন মন্ত্রী লাখি রাম যোশী। এর জেরে রাজ্যের ওই প্রাক্তন মন্ত্রীকে সাসপেন্ড করল উত্তরাখণ্ডের বিজেপি নেতৃত্ব। এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। নেতারা মুখে গণতন্ত্রের বড়াই করলেও বিজেপির অন্দরমহলের ছবি ঠিক কী তাই এই ঘটনায় স্পষ্ট হয়েছে বলেই কটাক্ষ করছে বিরোধীরা। পাশাপাশি একে স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত বলে তোপ দেগেছেন ওই বিজেপি বিধায়কও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একটি চিঠি লিখেছিলেন উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মন্ত্রী ও বর্তমান বিজেপি বিধায়ক লাখি রাম যোশী (Lakhi Ram Joshi)। রাজ্যের বিরোধী দল কংগ্রেসের কয়েকজন নেতা সেটি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করার পরেই শোরগোল শুরু হয়। ওই চিঠিতে বর্ষীয়ান বিজেপি (BJP) বিধায়ক যোশী অভিযোগ করেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত বর্তমানে রাজ্যের ভালমন্দ নিয়ে চিন্তা না করে কালো টাকা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। পরিস্থিতি এমন জায়গা গিয়েছে যে উত্তরাখণ্ড হাই কোর্ট এই বিষয়ে সিবিআই ((CBI) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। যার ফলে দেশের সামনে এই রাজ্যের মাথা হেঁট হয়েছে। অবিলম্বে এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে মুখ্যমন্ত্রীকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক।
ওই চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, তিন বছর আগে ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত ক্ষমতায় আসার আগে দলের যে ভাবমূর্তি ছিল আজ তা নষ্ট হয়েছে। এর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলিই দায়ী। তাঁর জন্য প্রায় প্রতিটি বিষয়ে গোটা দেশের সামনে দল ও রাজ্যের মাথা হেঁট হচ্ছে। তাঁর এই চিঠি নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই নড়েচড়ে উত্তরাখণ্ডের বিজেপি নেতৃত্ব। এরপর দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে শুক্রবার লাখি রাম যোশীকে সাসপেন্ড করা হয়।
এপ্রসঙ্গে উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সভাপতি বংশীধর ভগত বলেন, ‘দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে লাখি রাম যোশীর তা রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো উচিত ছিল। কিন্তু, তার বদলে তিনি সোজাসুজি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বিষয়টি অযথা জটিল করার চেষ্টা করেছেন। তাই শৃঙ্খলাভঙ্গ (indiscipline) -এর কারণে তাঁকে সাময়িকভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কেন তিনি এই মন্তব্য করেছেন তা জানতে চেয়ে নোটিস দেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে উপযুক্ত উত্তর না দিলে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’
অন্যদিকে সাসপেন্ড হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে ওই বিজেপি বিধায়ক বলেন,’ এটা সম্পূর্ণ স্বৈরাচারী ও অনৈতিক আচরণ। এই বিষয়ে ফের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে সবকিছু জানাব। ছোটবেলা থেকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের শিক্ষা ও আদর্শে বড় হয়েছি। সেখান থেকেই শৃঙ্খলা ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা শিখেছি। যত বাধাই আসুক না কেন আমি আমার কাজ করে যাব।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.