ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে রাজ্য ছেড়েছিলেন। সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার কাছে গিয়েই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ও রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ। সোমবার গভীর রাতে দলের সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন অর্জুন। তখনই রাজ্যে দলের ছবি তুলে ধরেন। বিদ্ধ করেছেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক অমিত মালব্যকেও। এই তিন নেতা কীভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছেন সে ব্যাখ্যাও দেন। নাড্ডাকে অর্জুন বুঝিয়েছেন, এখনই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কড়া হাতে সংগঠনের রাশ না টানলে বঙ্গে দলের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
সম্প্রতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করে ঝুড়িঝুড়ি অভিযোগ করেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। দলে স্বাধীনতা নেই। আলোচনা না করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। পুরনোদের বদলে নব্য নেতাদের গুরুত্ব বাড়ছে, এমন গুচ্ছগুচ্ছ অভিযোগ করেন। বঙ্গ বিজেপি অভিভাবকহীন বলেও নাড্ডার কাছে অনুযোগ করেন। সেই অভিযোগ শোনার পরেই রাজ্যে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অমিত শাহ। শাহের ধমক খেয়েই সুকান্ত-শুভেন্দুরা গা-ঝাড়া দিয়ে রাস্তায় নামেন। তাতেও আন্দোলন দানা বাঁধছে না। মানুষের মনে দাগ কাটতে পারছে না ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা নেতৃত্ব। তার মধ্যেই ফের অর্জুনের বোমা। সংগঠন নিয়ে মোট ছ’দফা অভিযোগ তিনি জানিয়েছেন বলে খবর বিজেপি সূত্রে। সূত্রটি জানাচ্ছে, প্রথমত, বর্তমান ক্ষমতাসীন নেতৃত্বে অনভিজ্ঞতা রাজ্যে দলকে ডোবাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ধমক খেয়ে রাস্তায় নামলেও তা হচ্ছে কলকাতা কেন্দ্রিক। জেলায় কোনও প্রভাব পড়ছে না। ফলে জেলার নেতারা হতাশ। তৃতীয়ত, এর জেরেই নেতাদের মধ্যে দল ছাড়ার হিড়িক। যা আটকাতে না পারলে ভবিষ্যতে বাংলায় দলকে ভয়ঙ্কর বিপদের মধ্যে পড়তে হবে। তবে মঙ্গলবার এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অর্জুন। দিল্লি থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে রয়েছেন বলে জানান।
এর মধ্যে অর্জুনের অবস্থান নিয়ে ফের জল্পনা সামনে এসেছে। তিনি কি তৃণমূলের পথে পা বাড়াতেই রাজধানীতে শুভেন্দু-সুকান্তদের শূলে চড়াচ্ছেন? উঠেছে প্রশ্ন। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “অর্জুন সিং বিজেপিতে গিয়েছিলেন। তাঁর অভিজ্ঞতা হয়েছে কেন্দ্র নয়, রাজ্যই কাজ করছে। তবে তিনি কোথায় কবে যাবেন সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে এটা বোঝা গেল যে, বিজেপি সাংসদদের কথা বিজেপি সরকার শোনে না। বাংলার সমস্যায় বিজেপি কান দেয় না।” তৃণমূলে অর্জুন আসতে চাইলে সেই সিদ্ধান্ত নেতৃত্ব নেবে বলেও জানিয়েছেন কুণাল।
তৃণমূল বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়র আবার বক্তব্য, “অর্জুন হচ্ছেন কৌরবদের মধ্যে একমাত্র পাণ্ডব, যাঁর চোখ পাখির চোখের দিকে থাকে। তবে উনি কী ভাবছেন সেটা নিয়ে কোনও মন্তব্য আমার করার প্রয়োজন নেই।” জাতীয় সড়কে মিছিলের মতো একাধিক মামলায় এদিন আগাম জামিন নিতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন বাবুল। রাজ্য বিজেপি নেতা শমিক ভট্টাচার্যর পালটা বক্তব্য, “অর্জুন সিং দলীয় প্রতীকে জয়ী সাংসদ। খড়দহ, ভবানীপুর, কলকাতা পুরসভা নির্বাচনের কাজ দায়িত্ব নিয়ে পালন করেছে। তিনি সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে দেখা করেছেন। এরপর কেউ কিছু বললে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, রাজ্য সভাপতি বলবেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.