সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: রাজ্যে যখন বিজেপিতে কে আছে কে নেই? কার সঙ্গে কার দ্বন্দ্ব? এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তখনই দিল্লি গিয়ে একের পর এক শীর্ষ নেতার সঙ্গে বৈঠক করে চলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পর বুধবার তিনি দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। প্রায় ৪৫ মিনিটের বৈঠক শেষে জানালেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আশীর্বাদ চাইতে এসেছিলেন। তবে, বাংলার বিজেপির কর্মীদের দুর্দশার কথা তুলে ধরাও তাঁর উদ্দেশ্য ছিল।
শুভেন্দু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলে, বাংলার হিংসার কথা তুলে ধরবেন, আগামীদিনের পথচলার দিশা চাইবেন, সেটা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু, এদিন প্রধানমন্ত্রী-শুভেন্দু সাক্ষাৎ ছাড়াও আরও একটি বৈঠকে নজর ছিল রাজনৈতিক মহলের। শুভেন্দুর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের দিনই হঠাৎ দিল্লি পাড়ি দেন বিজেপির আরও তিন সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh), সৌমিত্র খাঁ এবং নিশীথ প্রামাণিক। এদের মধ্যে প্রথম দু’জনের সঙ্গে এদিন বেশ কিছুক্ষণ কথা হয় শুভেন্দুর। যা নিয়ে বিজেপির অন্দরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিককালে একাধিকবার অর্জুন সিংকে দলের রাজ্য নেতাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শোনা গিয়েছে। আর সৌমিত্র খাঁ’র বিজেপিতে (BJP) থাকা নিয়ে কোনও সংশয় না থাকলেও দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যে মোটেই সুখকর নয়, সেটা নিজেই একাধিকবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন। দিলীপের বৈঠকে অনুপস্থিতি, আবার মুকুলের বাড়িতে হঠাৎ সাক্ষাত করতে যাওয়া, এসব অন্তত তেমনটাই ইঙ্গিত করে।
এই দুই ‘অখুশি’ সাংসদের সঙ্গে কেন বৈঠক শুভেন্দুর? রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলছেন,”ওঁরা সাংসদ, দিল্লিতে আসতেই পারে। বিভিন্ন কমিটির মিটিং থাকে। স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকের জন্য এসেছে। আমাকে ডাকল আমি আছি তাই। এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ।” অর্জুন সিং আবার রসিকতার সুরে বললেন, “সৌমিত্র খাঁ আমাদের জন্য ভাল মধ্যাহ্নভোজনের আয়োজন করেছিল। সেখানেই আলোচনা করেছি বাংলায় কীভাবে এগোনো যাবে, সেসব নিয়ে। তাছাড়া বাংলার বাইরে কোথাও আলোচনা করা যাবে না, সেটা তো নয়।” তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল দিল্লিতে এই তিন সাংসদের সাক্ষাৎ নিয়ে নাকি রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ কিছুই জানেন না। তাঁর বক্তব্য,”ওরা সাংসদ, দিল্লি যেতেই পারেন। কোনও বৈঠক আছে কি না জানি না। কেন গিয়েছেন, আমার কাছে কোনও খবর নেই।”
এ তো গেল দিল্লিতে তিন সাংসদের বৈঠক প্রসঙ্গ। রাজ্য বিজেপির অন্দরে এখন মূল আলোচ্য বিষয় মুকুল রায় এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajib Banerjee) অবস্থান। গতকালও দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) ডাকা বৈঠকে গরহাজির ছিলেন মুকুল রায় (Mukul Roy) এবং ‘বেসুরো’ রাজীব। যা নিয়ে দল রীতিমতো অস্বস্তিতে। শুভেন্দুও বুধবার দিল্লিতে সেই অস্বস্তি কাটাতে পারলেন না। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শুভেন্দুর সাফ বক্তব্য, ‘‘এ ব্যাপারে আমি কিছু বলব না।’’ যদিও, অর্জুন সিং দাবি করেছেন, “মুকুলদার শরীর খারাপ, কিছু ব্যক্তিগত সমস্যা আছে। তাই বৈঠকে যেতে পারেননি।” আর রাজীব প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য,”রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় চিরকাল ক্ষমতার সঙ্গে থাকতে পছন্দ করেন। তৃণমূলে গেলে ভুল করবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.