সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর বিধায়ক পদ নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল। তাঁর নির্বাচনের বৈধতা সম্পর্কিত রাজ্য সরকারের করা আবেদন গ্রহণ করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। সরকারি পদে থাকা সত্ত্বেও কীভাবে নির্বাচনে অংশ নিলেন? এই প্রশ্ন তুলে তাঁর নির্বাচনের বৈধতা সম্পর্কিত কলকাতা হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার যে মামলাটি করেছিল, সেটি গ্রহণ করল বিচারপতি এ আমানুল্লাহ এবং বিচারপতি এস ভি এন ভাট্টির বেঞ্চ।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মুকুটমণিকে রানাঘাট কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করে বিজেপি (BJP)। সেই সময় তিনি এসএসকেএম-এ কর্মরত। যেহেতু কোনও সরকারী কর্মী নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না, তাই সেই সময় তিনি ইস্তফা দেন। তবে তা গ্রহণ করেনি স্বাস্থ্য দপ্তর। ২০১৯ সালের ২ এপ্রিল স্বাস্থ্য দপ্তরের এক অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে তাঁর ইস্তফা গ্রহণ না করে চুক্তি অনুযায়ী চাকরিতে যোগদানের নির্দেশ দেয়।
যাকে চ্যালেঞ্জ করে ট্রাইবুনালে যান মুকুটমণি (Mukut Mani Adhiakari)। দাবি করেন, তিনি স্থায়ী কর্মী ছিলেন না। ২০২১ সালে ১ ফেব্রুয়ারি ট্রাইবুনাল তাঁর ‘অস্থায়ী’ চাকরির যুক্তিকে মান্যতা দিলে, পালটা চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টে যায় রাজ্য। সেখানে ২০২১ সালের ২৭ জুলাই বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি সৌমেন সেনের বেঞ্চও একই নির্দেশ দেয়। বলা হয়, তিনি অস্থায়ী কর্মী, তাই স্বাস্থ্য দপ্তরের অন্তর্বর্তী নির্দেশ বাতিল করা হল। হাই কোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এবার সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য।
এদিনও মুকুটমণির আইনজীবী আদালতে সেই ‘অস্থায়ী’ তত্ত্ব তুলে ধরে বলেন, একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে অন্যায়ভাবে অপদস্থ করা হচ্ছে। রাজ্যের তরফে আইনজীবী রাজা চট্টোপাধ্যায় আদালতে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ন্যুনতম পাঁচ বছর চাকরি করতেই হবে। উনি যা মানেননি। সূত্রের খবর অনুযায়ী এরপরই আদালত জানতে চায়, সরকারি কর্মচারী হয়ে মুকুটমণি নির্বাচনে অংশ নিলেনই বা কী করে? গোটা বিষয় সম্পর্কে রাজ্যের আইনজীবী রাজা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “হাই কোর্ট আমাদের যুক্তি গ্রাহ্য না করলেও আজ মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট তা গ্রহণ করেছেন।” মুকুটমণির বক্তব্য, “বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল আমায় রিলিজ দেয়। কারণ ওরা যে নিয়ম দেখাচ্ছে, তা অস্থায়ী কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে এসব করছে রাজ্য। আমি নিশ্চিত, ওরা সুপ্রিম কোর্টেও হারবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.