সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: কথায় আছে, ‘স্বভাব যায় না মলে’। মানুষ অভ্যাসের দাস, আর সেই অভ্যাসের জেরে ভুলভ্রান্তি হয়েই যায়। তেমনটাই হল মঙ্গলবার। নয়াদিল্লিতে নিজের বাসভবনে মুকুল রায় সাংবাদিক সম্মেলন করতে বসে বিজেপির সদর দপ্তর বলতে গিয়ে ভুলবশত বলে ফেললেন তৃণমূল ভবন। কিন্তু পরক্ষণেই ভুল শুধরে নেন বিজেপি নেতা। দুবার ঢোঁক গিলে বিজেপি ভবন বলেন তারপর। কিন্তু মুকুল রায়ের এই ভুল নিয়ে রীতিমতো আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। ভুল হোক যাই হোক, পুরনো অভ্যাসের কথা ফেলে দিতে পারছেন না কেউই।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দিল্লিতে বসে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তাঁর দাবি, অর্জুন সিংকে ভয় পেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ভয় পেয়েই তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মমতার পাশাপাশি এদিন রাজ্যের এডিজি আইনশৃঙ্খলা জ্ঞানবন্ত সিংকেও কাঠগড়ায় তোলেন মুকুল। তাঁর দাবি, জ্ঞানবন্ত সিং তৃণমূলের ক্যাডারের মতো কাজ করছেন। এবং তাঁর পুরস্কার পাচ্ছেন।
মুকুল রায় বলেন, “মমতা যে অরাজকতা চালাচ্ছে তা সুচারুভাবে চালাতে কাজে লাগাচ্ছে জ্ঞানবন্ত সিংকে। রিজওয়ানুর মামলায় হাই কোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট সকলেই জ্ঞানবন্তের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু, তা না করে তাঁকে একের পর এক প্রোমোশন দিচ্ছেন মমতা। যে রিজওয়ানুরকে বেচে গোটা রাজ্যে ভোট পেলেন। তাঁর ষড়যন্ত্রকারীকেই মাথায় তুলে রেখছেন মুখ্যমন্ত্রী।” মুকুল রায় জানিয়েছেন, জ্ঞানবন্ত সিংয়ের বিরুদ্ধে আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে অভিযোগ জানানো হয়েছে। এবার রাজ্যপাল এবং স্বরাষ্ট্র সচিবকেও জানাবেন তিনি।
এরপরই মুকুল রায় দাবি করেন, এ সংক্রান্ত অভিযোগের প্রমাণ রয়েছে তাঁদের কাছে। এই বিষয়ে আগামিকাল, বুধবার বিজেপি সদর দপ্তরে সাংবাদিক বৈঠক করার কথা বলেন তিনি। সেটা বলতে গিয়ে মুখ ফসকে তিনি তৃণমূল ভবন বলে ফেলেন। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই ভুল শুধরে নেন বিজেপি নেতা। তারপর তিনি বলেন, ‘বিজেপি ভবনে প্রেস কনফারেন্স করা হবে। সেখানেই সামনে আনা হবে তৃণমূল ভবন-সহ অন্য জায়গার কথোপকথন ও ক্লিপিংস।’ তবে দ্রুত ভ্রম সংশোধন হলেও রাজনৈতিক মহলের মত, একসময় পুরনো দল ও তার ভবনের নাম সর্বক্ষণ আওড়াতেন মুকুল রায়। সেই অভ্যাস তো সহজে যাওয়ার নেই। তার জেরেই হয়তো এই ভুল… কে জানে!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.