সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত কয়েকদিনের জল্পনা সত্য়ি করে মঙ্গলবারই এনডিএ জোট থেকে বেরিয়ে এসেছেন নীতীশ কুমার (Nitish Kumar)। আরজেডি, কংগ্রেসের মতো বিরোধীদের হাত ধরে তৈরি করেছেন নয়া জোট। আর সেই জোটেরই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বুধবার বিকাল ৪টেয় নতুন করে শপথ নেবেন তিনি। আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন। বিজেপি (BJP) কেন নীতীশকে বুঝিয়ে ধরে রাখতে পারল না। সূত্রের দাবি, গেরুয়া শিবির খুব ভাল করে জানত নীতীশ এমন কিছু করতে পারেন। কিন্তু এরপরও তারা তাঁকে আটকানোর কোনও উদ্যোগ নেয়নি।
সূত্রের দাবি, বিহারের সাতবারের মুখ্যমন্ত্রী যে এনডিএ জোট ছেড়ে দেবেন, তা বুঝেই গিয়েছিল বিজেপি। কারণ নীতীশ ২০২৪ সালে বিরোধীদের নেতা তথা ‘প্রধানমন্ত্রীর মুখ’ হিসেবে তুলে ধরতে চান। পাশাপাশি তিনি রাজনৈতিক নিরাপত্তাহীনতাতেও ভুগছিলেন। কেননা কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরসিপি সিংয়ের মাধ্যমে জেডিইউতে (JDU) ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। ওই বিধায়ক দল ছাড়তেই তাই আর জোট ভাঙার ব্যাপারে দ্বিধা করতে চাননি নীতীশ।
বিজেপি কিন্তু সব বুঝেও কার্যত নীরবই ছিল। যদিও অমিত শাহ নাকি তাঁকে সোমবার ফোন করেছিলেন, এমনটা শোনা যাচ্ছে। দলের রাজ্য শীর্ষ নেতারাও তাঁকে গোপনে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন, এই গুঞ্জনও রয়েছে। ফলে নীতীশকে রোখার কোনও চেষ্টাই বিজেপি করেনি, তা নাও হতে পারে। কিন্তু সব মিলিয়ে তাঁকে আটকানোর চেষ্টাটা যে খুব শক্তিশালী কিছু ছিল না তা স্পষ্ট।
মঙ্গলবারই এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংকে বলতে শোনা গিয়েছে, বিজেপি জোটধর্ম মেনে চলেছে। কিন্তু নীতীশ ‘ঘোড়া কেনাবেচা’ নিয়ে ব্যস্ত থেকেছেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সময় যে তাঁর দলের আসন ছিল ৩৬, যেখানে বিজেপির ছিল ৬৩, সেই তথ্যও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
আর এটাই বিজেপির অবস্থান। তারা জনমানসে এটা পরিষ্কার করে দিতে চায়, বিহারে মহারাষ্ট্রের মতো কিছু ঘটানোর কোনও ইচ্ছা নেই তাদের। আর এভাবেই রাজ্যের ২৪৩টি আসনেই নতুন করে ফোকাস করে এগনোই লক্ষ্য গেরুয়া শিবিরের। লোকসভা নির্বাচনে লোক জনশক্তি পার্টি ও অন্যান্য দলগুলির সঙ্গে একাই লড়তে চায় বিজেপি।
আগের নির্বাচনে বিহারের প্রধান তিনটি দল ছিল আরজেডি, জেডি(ইউ) এবং বিজেপি। হিসেব অনুযায়ী, যে কোনও দু’টি দল জোট গড়লেই ক্ষমতায় আসা নিশ্চিত। কিন্তু গত কয়েক বছরে বদলেছে সমীকরণ। ক্রমশই দুর্বল হচ্ছে নীতীশ ম্যাজিক। তাই এই পরিস্থিতিতে দ্বিমুখী লড়াইয়েই যে বিহারের ভবিষ্যৎ, সেটাই মনে করছে বিজেপি। তাই আগামিদিনে সেই লড়াইয়েই নীতীশকে হারিয়ে বিহারের মসনদে বসার গেমপ্ল্যান তৈরি করেছে গেরুয়া শিবির। সেই কারণেই শেষ পর্যন্ত নীতীশ চলে যেতে চাইলে তাঁকে আটকানোর দরকার নেই, এই স্ট্র্যাটেজিই নিয়েছে বিজেপি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.