Advertisement
Advertisement
কৈলাস বিজয়বর্গীয়

কৈলাসের হিমালয়-যাত্রা, বাঙালি সন্ন্যাসীর কুঠিয়ায় রাত কাটালেন বিজেপি নেতা

রান্নাও করলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়।

BJP Kailash Vijayvargiya spent night at Barnavat of Uttarkashi
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:September 3, 2019 7:12 pm
  • Updated:September 3, 2019 7:12 pm  

গৌতম ব্রহ্ম: স্কন্দপুরাণের কেদারখণ্ডে জ্বলজ্বল করছে শিখর বারণাবত।
এখানে বসেই পাণ্ডবমাতা কুন্তী শিবের তপস্যা করেছিলেন। কুন্তীর মনোকামনা পূরণ হয়েছিল। মহাদেব এখানে তাই মনোকামেশ্বর রূপে পূজিত। পুরাণের পাতা উলটে সেই বারণাবতের দুর্গম শিখরে পৌঁছে গেলেন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। কুন্তীর তপোস্থলিতে বসে মন্ত্র পড়ে রুদ্রাভিষেক করলেন।

শুধু মনোকামেশ্বর মন্দিরে পুজো করাই নয়, সেই দুর্গম পর্বত শিখরে রাতও কাটালেন বিজেপি নেতা। নিজের হাতে রান্না করে খেলেন, খাওয়ালেনও। শেষ করলেন শিখরেশ্বর মন্দিরের তত্ত্বাবধায়ক স্বামী শংকর চৈতন্যের ডেরায় বসে তাঁরই লেখা ‘তিব্বতের রহস্যময় যোগ ও তন্ত্র ও অলৌকিক জ্ঞানগঞ্জ’ বইটি। ওই বাঙালি সন্ন্যাসীর কাছে অনুশীলন করলেন বেশ কিছু গুপ্ত যোগবিদ্যাও।

Advertisement

উত্তরকাশীর শিখর বারণাবত। মহাভারতের বারণাবত খণ্ডের এপিসেন্টার। চোখ বন্ধ করলে এখনও এখানকার মানুষ অনুভব করেন জতুগৃহের সেই লেলিহান আগুন। গলে যাওয়া লাভার চিহ্ন এখনও পাহাড়ের গায়ে কৌরবদের অপকীর্তির শিলালিপি লিখে রেখেছে। জতুগৃহের অগ্নিকুণ্ড থেকে পাণ্ডবরা পালিয়ে গিয়েছিলেন যে সুড়ঙ্গপথ ধরে, সেটি এখনও রয়েছে। লোকচক্ষুর অন্তরালে এখানে বসেই ২০ বছর ধরে সাধনা করছেন শংকর মহারাজ।
রাজনীতি থেকে বহু দূরে হিমালয়ের সেই দুর্গম পাহাড়ি কুঠিয়ায় কৈলাস বিজয়বর্গীয় কাটিয়ে এলেন টানা ১৮ ঘণ্টা। একদিকে যমুনোত্রী, ভাগীরথী পিক ১, পিক ২, নীলপর্বত। অন্যদিকে, সমুদ্রমন্থনের সেই মন্দার পর্বত! শিখর পর্বতের পাশেই ব্যাসপর্বত, ব্যাসগুহা, ব্যাসকুণ্ড। বাঘ-ভল্লুকের অভয়ারণ্য।

কিছুটা নিচে ‘ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশ’-এর মাহিডান্ডা ক্যাম্প। সেখানেই কৈলাসের রাত্রিবাসের ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্তু, সন্ন্যাসীর কুঠিয়াতেই থাকলেন বাংলার পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। বাংলার সঙ্গে তাঁর অনেকদিনের সম্পর্ক। বাংলা বুঝতে পারেন। ভাঙা ভাঙা বলতেও পারেন। কিন্তু তিনি যে খুঁজে খুঁজে হিমালয়ের এক বাঙালি সন্ন্যাসীর গুপ্ত ডেরায় পৌঁছে যাবেন তা অনেকেরই কল্পনার বাইরে। শংকর স্বামী জানালেন, কৈলাসজি এখানে এসে নিজের হাতে রান্না করেছেন। প্রাতঃরাশ বানিয়েছেন। রাত দু’টো পর্যন্ত স্কন্দপুরাণ পড়েছেন। সাধারণ মানুষের মতো তক্তপোষে ঘুমিয়েছেন। একবারের জন্যও মনে হয়নি উনি বিজেপির একজন শীর্ষ পদাধিকারী।

হিমালয়ে কৈলাস-যাত্রার বিষয়টি যতাসম্ভব গোপনই রাখা হয়েছিল। দিল্লির এক বন্ধু কৈলাসকে উত্তরকাশীর ওই বাঙালি সাধুর ডেরায় নিয়ে যায়। তবু কীভাবে জানি জেনে ফেলেছিলেন উত্তরকাশীর বিজেপি সভাপতি হরিশ ডংগওয়াল, আইটিবিপি-র কর্তারা। কিন্তু কৈলাস তাঁদের সাফ জানিয়ে দেন, তিনি এখানে রাজনীতির বাইরে কিছুটা সময় একান্তে কাটাতে এসেছেন। কোনও প্রচার চান না। উত্তরাখণ্ড পুলিশ ও আইটিবিপি জওয়ানদেরও ফিরিয়ে দেন তিনি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement