বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: বিধানসভা নির্বাচনের সাতদিন পর বিজেপি (BJP) ছত্তিশগড় ও মধ্যপ্রদেশে দুই মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করলেও রাজমাতা বেঁকে বসায় মরুরাজ্য রাজস্থানে জট অব্যাহত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দূত কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী জয়পুরে গিয়েও জট কাটাতে ব্যর্থ হলেন। ফলে আরও একদিন পিছিয়ে গেল রাজস্থানের (Rajasthan) মুখ্যমন্ত্রীর নাম প্রকাশ। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বেলা দেড়টায় বিজেপির পরিষদীয় দলের বৈঠক হবে।
সোমবার মধ্যপ্রদেশে সকলকে চমকে দিয়ে অনামী বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী মোহন যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী করল গেরুয়া শিবির। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানকে কার্যত রাজনৈতিক নির্বাসনে পাঠালেন নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ জুটি। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর স্পিকার হবেন বলে জানা গিয়েছে। দিল্লিতে একটি প্রবাদ চালু আছে। তা হল মোদির ডান হাত যে কাজ করে, বাঁ হাত জানতে পারে না। পরপর দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নাম সে কথাই প্রমাণ করল।
কিন্তু রাজস্থানেও কি তা অব্যাহত থাকবে? বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়ার (Vasundhara Raje Scindia) বদলে মরুরাজ্যেও কি নতুন কোনও মুখ মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসবেন? কারণ রাজমাতা মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার দাবি করে বসে আছেন। শিবরাজের অপসারণের সঙ্গে সঙ্গেই বড় কৌতূহল তৈরি হয়ে গেল বসুন্ধরার ভবিষ্যৎ নিয়ে। শিবরাজের অপসারণে রাজস্থানের দেওয়াল লিখন দেখতে পাচ্ছেন কেউ কেউ। বাজপেয়ী-আডবানী জমানায় প্রায় একই সঙ্গে তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন বসুন্ধরা, রমন সিং এবং শিবরাজ সিং চৌহান। ২০০৩ সালে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন বসুন্ধরা। কিছু বিরতির পর আবার ২০২০ থেকে ২০২৩। বসুন্ধরা মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন দুটি মেয়াদে। অর্থাৎ দশ বছর।
মঙ্গলবার রাজস্থানে পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেই বসুন্ধরার ভাগ্য সুনিশ্চিত হয়ে যাবে। তবে মরুরাজ্যে শঙ্কা শুধু একটাই, বসুন্ধরাকে অপাঙক্তেয় করে দিতে চাইলে বিদ্রোহ মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে না তো। কারণ, বসুন্ধরা তো শুধু মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন না, রাজ পরিবারের রক্তও রয়েছে তাঁর শরীরে। অনেক বিধায়ক এদিনও তাঁর বাড়িতে ভিড় করেছেন। কিন্তু পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, মোদি-শাহদের কার্যশৈলী দেখে আন্দাজ করা যাচ্ছে যে, রাজ্যে রাজ্যে প্রশাসনিক শীর্ষ স্তরে নতুন মুখ তুলে আনা শুরু হয়েছে। আর তার মাধ্যমে স্থানীয় স্তরে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা দূর করতে চাইছেন। যাতে স্থানীয় প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার কারণে লোকসভা ভোটে তার প্রভাব না পড়ে। রাজ্যে নব নির্বাচিত সরকারও নতুন উদ্যম পায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.