সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নোট বাতিলের ফলে অন্তত ২ শতাংশ জিডিপি হ্রাস হবে ভারতের। পূর্বাভাস দিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। নোট বাতিলের এক বছর পর দেখা যায় সেই ভবিষ্যদ্বাণী মিলে গিয়েছে অক্ষরে অক্ষরে। তখন বিজেপি নেতারা দাবি করেছিলেন, নোট বাতিলের ফলে লাভ হবে সার্বিকভাবে। কিন্তু কী বলছে সেই সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট, যা প্রকাশই পায়নি? রিপোর্টে বলা হচ্ছে, নোট বাতিলের ফলে সার্বিক ভাবে অন্তত ১ শতাংশ কমেছে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি। কিন্তু সেই রিপোর্ট প্রকাশই করতে দিল না বিজেপি।
একটু খোলসা করে বলা যাক। ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর কালো টাকা, জাল টাকা এবং সন্ত্রাসবাদ রুখতে নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু পরে দেখা যায় যে পরিমাণ কালো টাকা উদ্ধারের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল সে তুলনায় উদ্ধার হয়েছে নগণ্য। জাল টাকা, জঙ্গি দমনের উদ্দেশ্যও তেমন সাধিত হয়নি। এখন দেখা যাচ্ছে আর্থিক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশ। নোট বাতিলের ফলাফল খতিয়ে দেখার জন্য যে ৩১ সদস্যের সংসদীয় কমিটি তৈরি করা হয়েছিল, সেই কমিটির রিপোর্টে সে কথায় বলা হয়েছে। কিন্তু সেই রিপোর্ট প্রকাশ করতে দেননি বিজেপি সাংসদরা। আসলে ৩১ সদস্যের ওই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন কংগ্রেস সাংসদ বীরাপ্পা মইলি, কমিটিতে ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের মতো অর্থনীতিবিদরা। এই কমিটিতে ১৪ জন বিরোধী এবং ১৭ জন বিজেপি সাংসদ ছিলেন। তথ্য ও পরিসংখ্যান খতিয়ে কমিটি একটি রিপোর্ট তৈরি করে, যাতে দেখানো হয় নোট বাতিলের ফলে অন্তত এক শতাংশ জিডিপির ঘাটতি হয়েছে। নোট বাতিলকে ‘অপরিকল্পিত’ সিদ্ধান্ত হিসেবেও বর্ণনা করা হয় কমিটির রিপোর্টে।
[মোদিকে কড়া ভাষায় চিঠি মনমোহন সিংয়ের, কিন্তু কেন?]
কিন্তু বীরাপ্পা মইলি রিপোর্ট পেশের পরই বেঁকে বসেন বিজেপি সাংসদরা। তাঁরা দাবি জানান, এই রিপোর্ট পেশ করা যাবে না সংসদে। বরং নতুন করে আর একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়। সরকার পক্ষের সাংসদরা বিকল্প রিপোর্ট পেশের প্রস্তুতিও শুরু করে। শেষ পর্যন্ত প্রথামতো ভোটাভুটিতে গেলে কোনও প্রস্তাবই সর্বসম্মতিতে পাশ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। তাই ঠিক হয় আলোচনার মাধ্যমে পাশ করানো হবে প্রস্তাব। গত মার্চ মাসে খসড়া রিপোর্ট প্রস্তুত হয়ে গেলেও নানা অজুহাতে আলোচনার প্রস্তাব এড়িয়ে আসছিলেন বিজেপি সাংসদরা। অবশেষে এ সপ্তাহে কমিটির শেষ বৈঠকেও আলোচনা হল না খসড়া প্রস্তাব নিয়ে। আগামী ৩১ আগস্ট কমিটির মেয়াদ শেষ। সুতরাং, যে খসড়া তৈরি হয়েছিল তা আর সংসদে পেশ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা রইল না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.