সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে গোবলয়ে হোয়াইট ওয়াশ কংগ্রেস। ‘হার্ট অফ ইন্ডিয়া’য় ফুটল পদ্ম। রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা, ভালোবাসার দোকান কিংবা নরম হিন্দুত্ব কোনও কিছুই গোবলয়ের জনতার মন কাড়তে পারেনি। উলটে ‘মোদি ম্যাজিকে’ ভরসা রেখেছে তারা। আর ঠিক এখানেই কংগ্রেসের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। উলটোদিকে বিজেপির জয়রথ ঠেকাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প দূরবিন দিয়েও খুঁজে পাওয়া ভার হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ৪ রাজ্যের ভোটের ফলাফল সামনে আসার পরই কংগ্রেসকে তুলোধোনা করেছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা দলীয় মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, “এই জয় বিজেপির সাফল্য নয়, কংগ্রেসের ব্যর্থতা। দেশে বিজেপিকে হারানোর লড়াইতে নেতৃত্ব দেওয়ার দল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস।”
ভারতে ২০১৪ পরবর্তী নির্বাচনের ফলাফলে নজর রাখলে বিষয়টা আরও স্পষ্ট হবে। ২০১৪ সালে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়েছিল বিজেপি জোট। এর পর থেকে গেরুয়া শিবিরের অশ্বমেধের ঘোড়া ছুটছেই। মাঝে দক্ষিণ ভারত ছাড়াও বিহার, বাংলা, ঝাড়খণ্ড ও ছত্তিশগড়ে ধাক্কা খেয়েছিল তারা। বাকি চার রাজ্যে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে পদ্মশিবির। কোথাও বিধানসভা তো কোথাও লোকসভা ভোটে ভালো ফল করেছে তারা। কিন্তু এই বাংলায় দাঁত ফোটাতে কার্যত ব্য়র্থ হয়েছে মোদি-শাহ-নাড্ডা জুটি।
২০১৪ সালে যখন দেশজুড়ে পদ্ম ফুটছে তখন এ রাজ্যে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের ঝুলিতে এসেছিল ৩৪টি লোকসভা আসন। বিজেপি জিতেছিল মোটে ২টিতে। লোকসভা মেটার মাত্র ২ বছরের মধ্যে বাংলায় ছিল বিধানসভা নির্বাচন। তাতে তৃণমূল পেয়েছিল ২১১টি আসনে। আর পদ্মশিবির খাতা খোলে মোটে ৩ বিধানসভা কেন্দ্রে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মোদির জয়রথ ছুটেছিল আরও জোরে। ২০১৪-এর চেয়ে বেশি আসন পেয়েছিল তারা। অথচ বাংলায় কিন্তু সেই গেরুয়া ঝড়ের মধ্যে ২২ আসন নিজেদের দখলে রেখেছিল তৃণমূল। একুশের বিধানসভার আগে বিজেপির দিল্লির নেতাদের হম্বিতম্বি ছিল চোখে পড়ার মতো। সেইসময় গোটা দেশে গেরুয়াকরণ হলেও এ রাজ্যে তাদের থামতে হয়েছিল ৭৭ আসনেই। পরে সেই সংখ্যা আরও কমেছে।
তৃণমূল নেতারা বরাবরই দাবি করেছেন, মোদিকে ঠেকাতে বিকল্প একমাত্র মমতাই। অন্তত সাম্প্রতিক ভোটের চিত্র অন্তত সেটাই বলছে। মোদি-শাহ-নাড্ডাদের মতো পোড়খাওয়া রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে একা লড়াই করে গিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে কুৎসা, কেন্দ্রীয় এজেন্সিদের অতিসক্রিয়তা থেকে বিরোধীদের সম্মিলিত আক্রমণ সবকিছুর বিরুদ্ধেই বুক চিতিয়ে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে এনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
৪ রাজ্যের ভোটের ফল সামনে আসার পরই সেকথা নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন তৃণমূলের রাজ্য আইটি সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য। প্রশ্ন করেছেন, “এই মুহূর্তে ভারতবর্ষের মাটিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া বিজেপিকে বিজেপির ভাষায় লড়াই ফিরিয়ে দেওয়ার শক্তি আর কজনের আছে?”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.