সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তৎকালীন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির আমন্ত্রণে ভারতে আসা পাক সাংবাদিক নাকি আসলে ছিলেন পাকিস্তানি গুপ্তচর! নুসরত মির্জা নামের ওই কলামিস্ট নিজেই পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের হয়ে কাজ করার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর এহেন চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তিকে হাতিয়ার করে এবার কংগ্রেস এবং প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি আনসারির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি।
বুধবার বিজেপির মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া কংগ্রেস ও হামিদ আনসারিকে (Hamid Ansari) একহাত নিয়ে বিষয়টি স্পষ্ট করার দাবি জানান। সুর চড়িয়ে পাক সাংবাদিক নুসরত মির্জার বয়ান তুলে ধরেন তিনি। সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মির্জাকে বলতে শোনা যায় যে, কেন্দ্রে ইউপিএ সরকারের আমলে তৎকালীন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির আমন্ত্রণে অন্তত পাঁচবার ভারতে আসেন তিনি। ওই সফরের সময় নয়াদিল্লি থেকে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বহু তথ্য গোপনে হাসিল করে তা আইএসআইয়ের হতে তুলে দিয়েছেন। এই কাজের জন্য তিনি বেশ গর্ব বোধ করছেন বলেও জানিয়েছেন মির্জা।
মির্জার এই বয়ান সামনে আসতেই দেশজুড়ে তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে বিজেপি মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া বলেন, “আমাদের প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে জনৈক পাকিস্তানি সাংবাদিকের দাবি শুনে আমি হতচকিত। তারচেয়েও অবাক কাণ্ড, যে ইউপিএ আমলে তাঁকে (হামিদ আনসারি) দ্বিতীয়বার ওই পদে বসানো হয়। সেই সময় দেশের শীর্ষপদগুলির গোপনীয়তা ভঙ্গ করা হয়ছে। এই বিষয়ে জবাব দিতে হবে আনসারি ও কংগ্রেসকে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, যে আইনমাফিক তিনটি শহরের বদলে ওই পাকিস্তানি সাংবাদিককে সাতটি শহরে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-এর এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে গৌরব ভাটিয়া অভিযোগ করেন, ইরানের রাষ্ট্রদূত থাকাকালীন ভারতের স্বার্থের বিপরীতে কাজ করেছেন আনসারি।
এদিকে, সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি আনসারি। তাঁর কথায়, “আমার বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের একাংশ ও বিজেপি মিথ্যা খবর পরিবেশন করছে। এটা সবাই জানে যে কোনও বিদেশি প্রতিনিধিকে সরকার এবং বিদেশমন্ত্রকের সুপারিশ মতোই আমন্ত্রণ পাঠান উপরাষ্ট্রপতি। আমি তাঁকে (নুসরত মির্জা) ব্যক্তিগতভাবে কোনও আমন্ত্রণ পাঠাইনি এবং তাঁর সঙ্গে দেখা করিনি।”
উল্লেখ্য, এক সাক্ষাৎকারে ভারত সফরের বর্ণনা দিতে গিয়ে পাক সাংবাদিক মির্জা বলেন পাঁচবার ভারতে এসেছিলেন তিনি। দিল্লি ছাড়াও বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, পাটনা এবং কলকাতায় গিয়েছিলেন তিনি। বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ওই পাক কলামিস্টের ভারত-বিদ্বেষ সবার জানা। বিভিন্ন সময় ভারত সরকারের নীতির কড়া সমালোচনাও করেছিলেন তিনি। পাকিস্তানে ভারতের বিরুদ্ধে বহু সভাও সংগঠিত করেছিলেন। পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেট লিগকে ভারতের বিরুদ্ধে হাইব্রিড যুদ্ধ বলেও অভিহিত করেছিলেন নুসরত মির্জা। আর এই হাইব্রিড যুদ্ধে পাকিস্তান জিতেছে বলে তাঁর ধারণা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.