Advertisement
Advertisement

Breaking News

Andaman and Nicobar

হাবড়া থেকে ‘কালাপানির দেশ’, আন্দামানে বিষ্ণুতেই ভরসা মোদির

কৃষক থেকে সাংসদ, বাঙালির লড়াই শোনালেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক।

Bishnu Pada Ray: BJP candidate from Andaman and Nicobar
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:April 17, 2024 4:52 pm
  • Updated:April 17, 2024 4:52 pm  

রমেন দাস: দূর বহু দূর! হাবড়ার দরিদ্র পরিবারের ছেলে জীবনের তাগিদে পাড়ি দিয়েছিলেন ‘কালাপানির দেশে’। উত্তাল সমুদ্রের মাঝখানে গিয়ে পড়েছিলেন এলোমেলো জীবনকে সাজিয়ে নিতে! কিন্তু সেই এলোমেলো জীবনেই উল্কার গতিতে উত্থান। অটলবিহারী বাজপেয়ী থেকে নরেন্দ্র মোদি, বিজেপির অলিন্দে তিনিই হয়ে উঠেছেন আন্দামানের ‘মসীহা’।

বিষ্ণুপদ রায়। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিককে এবার লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী করেছে বিজেপি (BJP)। আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের (Andaman and Nicobar) একমাত্র লোকসভা আসন আন্দামান নিকোবরের বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন তিনি। বর্তমান কংগ্রেস সাংসদ কুলদীপ রায় শর্মার বিরুদ্ধে মূলত লড়াই তাঁর। আগামী ১৯ এপ্রিলের নির্বাচনের (Lok Sabha ELection 2024) আগে দিনরাত প্রচারে ব্যস্ত বাঙালি বিষ্ণু। কিন্তু কেন তাঁকেই প্রার্থী করল বিজেপি? ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’-কে তাঁর জবাব, “২০১৯ সালের নির্বাচনে আমাকে দল প্রার্থী করেনি। কিন্তু সেবার বিজেপি এখানে হেরে যায়। খারাপ লেগেছিল সেদিন। আমি প্রার্থী না হলেও, আমার দল জয় পায়নি। ফের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডাজি আমার কথা ভেবেছেন। তাই আমি এখানে প্রার্থী হয়েছি।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: মমতার উত্তরসূরি কি অভিষেক? মুখ খুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো]

১৯৫৪ থেকে ১৯৫৮ সাল। আইনের বশে বহু বাঙালির স্থান হয়েছিল সমুদ্র অন্দরের এই দ্বীপরাজ্যে। বহু বাংলাভাষী মানুষ গিয়েছে সেখানে। আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার বাসিন্দা বাঙালি। ২৮ শতাংশের আশেপাশে বাংলায় কথা বলেন। পোর্ট ব্লেয়ার থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চল, সর্বত্র আধিপত্য রয়েছে বাঙালির। এই সমীকরণ মাথায় রেখেই ফের বিজেপির ভরসা বিষ্ণুপদ রায়? যদিও বিজেপি প্রার্থী বলছেন, “বাংলা আমার জন্মভূমি। হাবড়ার কল্যাণগড় স্কুলে আমার পড়াশোনা। তাই বাঙালি নিয়ে আবেগ তো আমার জন্মগত। কিন্তু এই দ্বীপপুঞ্জে শুধু বাঙালি নন, এটা মিনি ভারতবর্ষের মতো। এখানে সব ধর্মের মানুষ থাকেন। কোনও ভেদাভেদ নেই। সর্বধর্ম সমন্বয়েই এই এলাকা। মানুষ আমাকে ভালবাসেন। বাঙালি তো বটেই, আমার মাটির কাছাকাছি থাকা পছন্দ করেন মানুষ।”

সস্ত্রীক আন্দামানে থাকেন বিষ্ণুপদ। ১৯৯৯ সালে প্রথমবার সাংসদ হন। এরপর ফের ২০০৯ থেকে টানা দু’বার ২০১৯ পর্যন্ত বিজেপি সাংসদ ছিলেন তিনি। সুনামির ভয়ংকর দিন থেকে শুরু করে মন্ত্রিত্ব, আবার নিজের দলেই ‘ব্রাত্য’ থেকেছেন বারবার। তবুও লড়াই করেছেন তিনি। উত্তর ২৪ পরগনা থেকে পৌঁছে গিয়েছেন কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে। তাঁর সংসদীয় এলাকায় সমস্যাও রয়েছে বিস্তর। ‘জারোয়া’ থেকে শুরু করে বিলুপ্তপ্রায় জনজাতি। রাস্তা, আলো থেকে আন্তর্জাতিক চোখ রাঙানি। সবক্ষেত্রে রয়েছে নানা প্রশ্ন। এই প্রসঙ্গে বিষ্ণুপদ রায় বলছেন, “সমস্যা সর্বত্র থাকে। এখানেও রয়েছে। আমি এখানকার সাংসদ হিসেবে দিল্লিতে আওয়াজ তুলেছি বারবার। কাজ হয়েছে। বিজেপি সরকারের আমলে অনেককিছু পরিবর্তন হয়েছে। সকলের কথা বলেছি। সব বলেছি।”

[আরও পড়ুন: গোয়া নির্বাচনে ছিলেন আপের আর্থিক দায়িত্বে, লোকসভা ভোটের আগে ইডির হাতে গ্রেপ্তার সেই চনপ্রীত]

তাঁর সংযোজন, “কিন্তু গত পাঁচ বছর এই এলাকার যিনি সাংসদ, তিনি কোনও কাজ করেননি। এমপি ল্যাডের টাকা ঠিকমতো খরচ করেননি। মানুষের জন্য কাজ করেননি। আমি যা যা করেছিলাম, ওঁর সময় সব আরও পিছিয়ে গিয়েছে।” বাংলার সন্তান বিষ্ণুপদকে নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয় তাঁর বিরোধীরা। প্রশ্নও ওঠে নিরন্তর। কিন্তু তাঁর উত্তর, “আমি লড়াই করতে জানি। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারি। মানুষের সঙ্গে থাকি। সাংসদ হয়েও মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি। দুর্নীতি করিনি।”

নিঃসন্তান দম্পতি অনুকূল চন্দ্র ঠাকুরের ভক্ত। এক জীবনে চাষের কাজ করা বিষ্ণুপদ সংসার চালাতেও হিমশিম খেয়েছেন! তাঁর কথায়, “অনুকূলচন্দ্র ঠাকুরের ভক্ত আমি। তিনিই আমার ধ্যানজ্ঞান। চাষ করেছি। দিনমজুরের কাজ করেছি। বাংলার দিলীপ ঘোষ-সহ বহু নতুন-পুরনো নেতারা জানেন। আমার প্রচারে এসেছেন অনেকেই। প্রধানমন্ত্রীজি ভরসা রেখেছেন। আমি স্বচ্ছ। আমি সাধারণ। বাঙালি হিসেবে গর্বিত হয়েও সকলের, তাই হয়তো আমিই!”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement