সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্কঃ অভব্য আচরণ করলে, হিংসা বা আতঙ্ক ছড়ালে বিমানযাত্রীদের কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অসামরিক বিমান পরিষেবা মন্ত্রক। আট মাস আগে নেওয়া সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হল গত সপ্তাহে। ২০১৭-র অক্টোবর মাসে জেট এয়ারওয়েজের বিমানে অপহরণের আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য বিরজু কিশোর সাল্লা নামে এক ব্যক্তিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হল। পেশায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী সাল্লাই দেশের মধ্যে প্রথম ব্যক্তি, যাকে এই তালিকাভুক্ত করা হল।
[মোদির রাজ্যে নোটের বৃষ্টি, গানের অনুষ্ঠানে নগদে উড়ল ৫০ লক্ষ টাকা]
অসারমিক বিমান পরিষেবা মন্ত্রকের ডিরেক্টর জেলারেলের এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, আগামি পাঁচ বছরের জন্য মুম্বইয়ের এই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে জেট এয়ারওয়েজ। অন্যান্য বিমান পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাকেও পাঠান হবে এই ব্যক্তির কুকীর্তির খতিয়ান। যাতে এই ধরনের ব্যক্তিকে নিজেদের বিমানে পরিষেবা দেওয়ার আগে প্রতিটি বিমান সংস্থা সতর্ক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছিল গত বছরের ৩০ অক্টোবর। তাই, গত বছরের নভেম্বর থেকেই বিরজু কিশোর সাল্লার পাঁচবছর কালো তালিকাভুক্ত থাকার মেয়াদ শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও এই বিষয়ে মুখ খুলতে চায়নি জেট এয়ারওয়েজ।
[কর্ণাটকে ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’ কংগ্রেসের ডিকে, পেতে পারেন বড় পদ]
বিমানযাত্রায় কোনও যাত্রী দুর্ব্যবহার করলে নিয়মানুযায়ী তাকে নির্দিষ্ট গোত্রের শাস্তির মুখে পড়তে হয়। সেক্ষেত্রে এই ব্যক্তিকে দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ শাস্তির চেয়েও বেশি সাজা। নিয়মে বলা রয়েছে, কোনও যাত্রী বিমানের ক্ষতি করলে বা ইচ্ছাকৃত বিমানে যান্ত্রিক গোলযোগ ঘটালে, বিমানে মারামারি করলে তাকে দেওয়া হবে সর্বোচ্চ সাজা বা লেভেল থ্রি শাস্তি। অর্থাৎ, দুবছরের জন্য সেই যাত্রীকে তাদের বিমানে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে নির্দিষ্ট বিমান পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা। লেভেল টু-তে বলা হয়েছে, কোনও যাত্রী বিমানে কারও শ্লীলতাহানি করলে বা শারীরিক ভাবে কাউকে হেনস্তা করলে তাকে ছমাসের জন্য নিষিদ্ধ করা যাবে। এবং লেভেল ওয়ানে বলা হয়েছে, শারীরিক অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে কাউকে অসম্মান করলে সেই যাত্রীকে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা যাবে।
[কোথায় গেল দেশভক্তি, বিজেপির বিরুদ্ধে জাতীয় সংগীত অবমাননার অভিযোগ রাহুলের]
এখন প্রশ্ন, ঠিক কী হয়েছিল গত বছরের ৩০ অক্টোবর? জেট এয়ারওয়েজের বিমান ৯ডব্লু৩৩৯ করে মুম্বই থেকে দিল্লি যাচ্ছিলেন পেশায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী বিরজু কিশোর সাল্লা নামে ওই ব্যক্তি। ইচ্ছাকৃত ভাবে বিমানে অপহরণের আতঙ্ক ছড়ান তিনি। বিমানের বিজনেস ক্লাসে একটি চিঠি ফেলে দিয়েছিলেন এই ব্যক্তি। সেখানে লেখা ছিল, বিমানে আততায়ীরা আত্মগোপন করে রয়েছে। বিমানের কার্গো এলাকায় বোমা রাখা রয়েছে। বিমানটিকে অপহরণ করা হবে। বিমানচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বিমানটিকে পাক অধীকৃত কাশ্মীর বা পিওকের দিকে নিয়ে যাওয়ার। তা না করলে যে কোনও সময় বিমান বিস্ফোরণে উড়ানোর হুমকি দেওয়াও দেওয়া হয়েছিল চিঠিতে। এই চিঠি হাতে আসার পরেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল যাত্রী থেকে বিমানচালক ও পরিষেবা প্রদানকারী অন্যান্যদের মধ্যে। আতঙ্কের রেশ এতটাই তীব্র ছিল যে গন্তব্য দিল্লি থাকলেও বিমানটিকে অবতরণ করানো হয়নি দিল্লিতে। দিক পালেট তা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল আহমেদাবাদে। সেখানে অবতরণ করানো হয়েছিল বিমানটি। পরে বম্ব স্কোয়ড এসে বিমান পরীক্ষা করে দেখেছিল পুরোটাই গুজব। এমন কিছুই ছিল না বিমানে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.