সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিনরাত রাস্তায় ঘোরাঘুরি৷ খবরের খোঁজে দিন কেটে যায় তাঁর৷ প্রতিটি মিনিট-সেকেন্ড তাঁর কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ৷ ডেডলাইন ধাওয়া করে এগিয়ে চলাই পেশাগত জীবনের মূলমন্ত্র৷ কিন্তু মানবতা সব কিছুর ঊর্ধ্বে৷ তাই কাজ ফেলেই এনসেফালাইটিসে আক্রান্ত শিশুর মাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন সাংবাদিক আমির হামজা৷
বিহারে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে এনসেফালাইটিস৷ রোগের থাবায় ইতিমধ্যেই ১৭২ জনের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে৷ আক্রান্ত বহু৷ দিনচারেক আগে মুজফ্ফরপুরের সরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয় এক শিশুকে৷ প্রাথমিক চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ওঠে সে৷ বাড়ি ফিরে আসে শিশুটি৷ তবে বাড়িতে আসার পর থেকে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়ে৷ জ্বর আসায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবেন শিশুর মা৷ সন্তানকে কোলে নিয়ে তখন প্রায় পাগলের মতো অবস্থা মহিলার৷ হন্যে হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য গাড়ির খোঁজ করছিলেন৷ কিন্তু এনসেফালাইটিসে আক্রান্ত সন্তানকে বাঁচানোর আরজি জানানো মায়ের কান্নায় চিঁড়ে ভেজেনি৷ কেউই তাঁকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি৷
এদিকে, ঠিক সেই সময় ধিরান-ছাপড়া গ্রামের রাস্তা দিয়ে বাইকে চড়ে যাচ্ছিলেন সাংবাদিক আমির হামজা৷ গন্তব্য তাঁর অফিস৷ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অফিসে ঢুকতেই হবে ওই সাংবাদিককে৷ কিন্তু রাস্তার পাশে অসুস্থ সন্তানকে কোলে নিয়ে ঘোরাফেরা করতে থাকা উদ্বিগ্ন মাকে দেখে নিজেকে সামলে রাখতে পারেননি আমির৷ তড়িঘড়ি বাইক থামান তিনি৷ মহিলাকে বাইকে চড়ার অনুরোধ করেন৷ এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে শিশুকে নিয়ে বাইকে উঠে পড়েন মহিলা৷ সোজা চলে যান হাসপাতালে৷ সেখানেই শিশুটির চিকিৎসা শুরু হয়৷ আপাতত কিছুটা সুস্থ ওই শিশু৷ ‘‘ঠিক সময়ে সাংবাদিকের সঙ্গে দেখা না হলে হয়তো মেয়েকে বাঁচাতে পারতাম না’’, জানিয়েছেন শিশুর মা৷ পেশাগত ব্যস্ততাকে দূরে সরিয়ে তাঁর এহেন কর্মকাণ্ডকে বাহবা না দিয়ে পারছেন না কেউই৷ তবে সাংবাদিক এ নিয়ে বিশেষ বাড়াবাড়ি করতে নারাজ৷ শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াকে সাহায্যের পরিবর্তে দায়িত্ব বলেই মনে করছেন আমির৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.